পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী কোথায় সে যে চলে গেল রাত না পোহাতেই শূন্ত ঘরের দ্বারের কাছে সন্ন্যাসীও নেই। চৈত্রমাসে রৌদ্র বাড়ে বরফ গলে পড়ে,— ঝরনাতলায় বসে মোরা কাদি তাহার তরে । আজিকে এই তুষার দিনে কোথায় ফিরে নিঝর বিনে শুষ্ক কলস ভরে নিতে কোথায় পাবে ধারা । কে জানে সে নিরুদ্দেশে কোথায় হল হার) । কোথাও কিছু আছে কি গো---শুধাই যারে তারে,— আমাদের এই আকাশ-ঢাকা দশপাহাড়ের পারে ? গ্রীষ্মরাতে বাতায়নে বাতাস হু হু করে, বসে আছি প্রদীপ-নেব। তাহার শূন্য ঘরে । শুনি বসে দ্বারের কাছে ঝরন যেন তারেই যাচে বলে, “ওগো আজকে তোমার নাই কি কোনে তুম, জলে তোমার নাই প্রয়োজন এমন গ্রীষ্মনিশা ?” আমিও কেঁদে কেঁদে বলি, “হে অজ্ঞতচারী, তৃষা যদি হারাও তবু ভুলে না এই বারি ” হেনকালে হঠাং যেন লাগল চোপে ধাধা, চারিদিকে চেয়ে দেপি নাই পাহাড়ের বাধা । ঐ যে আসে, কারে দেখি ? আমাদের যে ছিল সে কি ? ওগো তুমি কেমন আছ, আছ মনের সুপে ? পোলা আকাশতলে হেথা ঘর কোথা কোন মূপে ? নাইকো পাহাড়, কোনোপানে ঝরনা নাহি ঝরে, তৃষ্ণ পেলে কোথায় যাবে বারিপানের তরে ? সে কহিল, “যে ঝরন সেথা মোদের দ্বারে, নদী হয়ে সে-ই চলেছে হেথা উদার-ধারে ।