পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামলী শুনতে শুনতে নিজেকে মনে হয় যে ছিল পাহাড়তলির ঝিরঝিরে নদী, তার বুকে হঠাৎ উঠেছে ঘনিয়ে শ্রাবণের বাদলরাত্ৰি । সকালে উঠে দেখা যায় পাড়ি গেছে ভেসে, একওঁয়ে পাথরগুলোকে ঠেলা দিচ্ছে অসহ্য স্রোতের ঘূর্ণি-মােতন । আমার রক্তে নিয়ে আসে তোমার সুর পাজরের উপরে আছড়-খাওয়া মরণ-সাগরের ডাক, ঘরের শিকল-নাড়া উদাসী হওয়ার ডাক । যেন হাক দিয়ে আসে অপূর্ণের সংকীর্ণ খাদে পূৰ্ণ স্রোতের ডাকাতি, ছিনিয়ে নেবে, ভাসিয়ে দেবে বুঝি । অঙ্গে অঙ্গে পাক দিয়ে ওঠে ঝোড়ো আকাশে উড়ো প্ৰাণের পাগলামি । ঘরে কাজ করি শান্ত হয়ে ; সবাই বলে “ভালো” । তারা দেখে আমার ইচ্ছার নেই জোর, সাড়া নেই লোভের, ঝাপটি লাগে মাথার উপর, ধুলোয় লুটােই মাথা । দুরন্ত ঠেলায় নিষেধের পাহারা কাত করে ফেলি। নেই এমন বুকের পাট ; কঠিন করে জানি নে ভালোবাসতে, কান্দতে শুধু জানি, জানি এলিয়ে পড়তে পায়ে । বঁাশিও'আলা, বেজে ওঠে তোমার বাশি