পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sao মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায় শালবনের নীলাঞ্জনে । * থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা ; চেন্না লোককে দেখলেম অচেনার গভীীর্যে । হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে অামাকে করলে নমস্কার । সমাজবিধির পথ গোল খুলে, আলাপ করলেম শুরুকেমন আছ, কেমন চলছে সংসার ইত্যাদি । সে রইল। জানলার বাইরের দিকে চেয়ে যেন কাছের দিনের ছোয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে । দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো—একটা জবাব, কোনোটা বা দিলেই না । কেন এ—সব কথা, এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা । আমি ছিলেম। অন্য বেঞ্চিৱতে ওর সাথিদের সঙ্গে । এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে । মনে হল কম সাহস নয় ; বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে । বললে মৃদুস্বরে, “কিছু মনে কোরো না, সময় কোথা সময় নষ্ট করবার । আমাকে নামতে হবে। পরের সেন্টশনেই ; দুরে যাবে তুমি, দেখা হবে না। আর কোনোদিনই । তাই যে প্রশ্নটিার জবাব এতকাল থেমে আছে, শুনব তোমার মুখে । সত্য করে বলবে তো ?” আমি বললেম, “বলব ।” বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল, “আমাদের গেছে যে দিন একেবারেই কি গেছে, কিছুই কি নেই বাকি ৷”