পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Obr রবীন্দ্র-রচনাবলী ܓ আজ এসো, এখানে এই মধুর বাতাসে বসে-” চন্দ্ৰ । (নেপথ্য হইতে) বড়োবউ ! ইন্দু। ঐ চন্দ্ৰবাবু আসছেন ! আমাকে দেখতে পেয়েছেন বোধ হল । তুমি বোলো তো ভাই, বাগবাজারের চৌধুরীদের কাদম্বিনী । আমার পরিচয় দিয়ে না, লক্ষ্মীটি, মাথা খাও । [পলায়ন পাশের ঘর গদাই আসীন। চাপিকান-শ্যামলাপরা ইন্দুর ছুটিয়া প্ৰবেশ গদাই । একি ! ইন্দু। ও মা, এ যে সেই ললিতবাবু! আর তো পালাবার পথ নেই। (সামলাইয়া লইয়া ধীরে ধীরে চাপাকান-শ্যামলা খুলিয়া গদাইয়ের প্রতি) তোমার বাবুর এই শামলা আর এই চাপকন । সাবধান করে রেখো, হারিয়ো না । আর শীগগির দেখে এসো দেখি, বাগবাজারের চৌধুরীবাবুদের বাড়ি থেকে পালকি এসেছে কিনা । গদাই । (হাসিয়া) যে আজ্ঞা । [প্ৰস্থান ইন্দু ! ছি:৷ ছি:! ললিতবাবু কী মনে করলেন ! যা হােক, আমাকে তো চেনেন না । ভাগ্যিস, হঠাৎ বুদ্ধি জোগালো, বাগবাজারের চৌধুরীদের নাম করে দিলুম। চন্দ্ৰবাবুর এ বাসাটিও হয়েছে তেমনি । অন্দর বাহির সব এক । এখন আমি কোন দিক দিয়ে পালাই ? ঐ আবার আসছে ; মানুষটি তো VeS eig B গদাইয়ের প্রবেশ গদাই । ঠাকরুন, পালকি তো আসে নি । এখন কী আজ্ঞা করেন ? ইন্দু । এখন তুমি তোমার কাজে যেতে পারে । না, না, এ যে তোমার মনিব এ দিকে আসছেন । ওঁকে আমার খবর দেবার কোনো দরকার নেই, আমার পালকি নিশ্চয় এসেছে । [ প্ৰস্থান গদাই । কী চমৎকার । আর কী উপস্থিত বুদ্ধি ! বা বা ! আমাকে হঠাৎ একদম চাকর বানিয়ে দিয়ে গোল— সেও আমার পরম ভাগ্যি । বাঙালির ছেলে চাকরি করতেই জন্মেছি, কিন্তু এমন মনিব কি অদৃষ্ট্রে জুটবে ? নির্লজ্জতাও ওকে কেমন শোভা পেয়েছে ! আহা, এই শামলা আর এই চাপিকান চন্দরকে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে না। বাগবাজারের চৌধুরী ! সন্ধান নিতে হচ্ছে। চন্দ্রের প্রবেশ চন্দ্ৰকান্ত । তুমি এ ঘরে ছিলে নাকি ? তবে তো দেখেছি ? গদাই । চক্ষু থাকলেই দেখতে হয়- কিন্তু কে বলে দেখি । চন্দ্ৰকান্ত । বাগবাজারের চৌধুরীদের মেয়ে কাদম্বিনী । আমার মীর একটি বন্ধু। গদাই । ওর স্বামী বোধ করি স্বাধীনতাওয়ালা ? চন্দ্ৰকান্ত । ওঁর আবার স্বামী কোথায় ? * গদাই । মরেছে বুকি ? আপদ গেছে। কিন্তু বিধবার মতো বেশ তো— এলাকান্ত। বিধবা নয় হে— কুমারী। যদি হঠাৎ মায়ুর ব্যাশে ঘটে থাকে তাে বলে, খটকালি গদাই । তেমন স্নায়ু হলে এতদিনে গলায় দড়ি দিয়ে মারাতুম। চন্দ্ৰকান্ত । তা হলে চলো, একবার বিনোদকে দেখে আসা যাক । তার বিশ্বাস, সে ভরি একটা