পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԳ Ե- রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী চতুর্থ অঙ্ক প্ৰথম দৃশ্য বীরবেশে রামচন্দ্ৰ রমাই। আপনি তো চলে এলেন, এ দিকে যুবরাজ বাবাজি বিষম গোলে পড়লেন । মন্ত্রী । কিরকম হে রামাই । রামাই । রাজার অভিপ্ৰায় ছিল, কন্যাটি বিধবা হলে হাতের নোয়া আর বালা দুগাছি বিক্রি করে রাজকোষে কিঞ্চিৎ অর্থাগম হয় । যুবরাজ তাতে ব্যাঘাত করাতে তম্বি কত । মন্ত্রী । মহারাজ, শুনতে পাই প্রতাপাদিত্য আপসোসে সারা হচ্ছেন। এ দিকে একটু ইশারা করলেই নিজের খরচে এখনো মেয়েটিকে পৌছিয়ে দিতে রাজি । রামাই । সেটা বিনি-খরচায় হতে পারে, কিন্তু ফিরে পাঠাবার খরচাটা মহারাজের নিজের গাট থেকে দিতে হবে । মন্ত্রী । সে তো বটেই। বিবাহ করেছেন তাদের বাড়িতে, কিন্তু নিজের বাড়িতে আনবার বেলা তো বিচার করতে হয় । কী বল রামাই । রামাই । সে তো বটেই। পাকে যদি মহারাজা পা দিয়ে থাকেন সে তো পাকের বাবার ভাগ্যি, তা বলে ঘরে ঢোকবার সময় পা ধুয়ে আসবেন না ? মন্ত্রী । বেশ বলেছ। রামাই । রামাই । মন্ত্রিবর, শুভকর্মে মহারাজের যীশুরে শ্বশুরমশায়কে একখানা নিমন্ত্রণপত্ৰ পাঠানো হয়েছে তো ? কী জানি, মনে দুঃখ করতেও পারেন । সকলের হাস্য বরণ করবার জন্যে এয়োস্ত্রীদের মধ্যে শাশুড়ি-ঠাকরুনকেও ভুললে চলবে না । মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ, সেটাও চাই— অতএব সেখানে যখন মিষ্টান্ন পাঠানো হবে তখন সেইসঙ্গে দুচারছড়া বঁকাচা রম্ভও পাঠানো ভালো । কী বল মন্ত্রী । মন্ত্রী । তার উপরে কথা । উচ্চহাস্য রমাই। আর দেখেন মহারাজ, যুবরাজকে একখানা পত্র লিখে জানাবেন যে, তোমাদের রাজত্ব রাজকন্যা তোমাদেরই থাক, প্ৰজাপতির কৃপায় জগতে শালা-শ্বশুরের অভাব নেই। কী বলেন আপনারা । সকলের উচ্চহাস্য রামচন্দ্র । রামাই, তুমি যাও, লোকজনদের দেখো-গে । [ারমাইয়ের প্রস্থান সেনাপতি, তুমি এইখানে বোসো, রমাইয়ের হাসি আমার ভালো লাগছে না । সেনাপতি ফর্নান্ডিজ । মহারাজ, রমাইয়ের হাসি গন্ধকের ধোয়ার মতো, তার ধোয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসে । রামচন্দ্র । ঠিক বলেছ সেনাপতি, আমার ইচ্ছে হচ্ছিল উঠে চলে যাই । আজ গান বাজনা ভালো জমছে না ফর্নান্ডিজ । ন্ডিজ । না মহারাজ, জমছে না, আমার বুকে বাজছে- আর-এক দিনের কথা মনে পড়ছে। রামচন্দ্র । গুজবটা কি সত্য । ফর্নান্ডিজ । কিসের গুজব ।