পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিত্ৰাণ S&br> উদয় । কিছু না, বেশ আছি । ধনঞ্জয় । তবে দাও একটু পায়ের ধুলো । উদয় । ও কী কর, ও কী কর । অপরাধ হবে যে । ধনঞ্জয় । দাদা, এতবড়ো বোঝা নিজের হাতে ভগবান যার কাধ থেকে নামিয়ে দেন, সে যে মহাপুরুষ । তোমাকে দেখে আমার সর্ব গায়ে কাটা দিচ্ছে। একবার দিদিকে আনো, তাকে একবার দেখি ! ! উদয় । সে তোমাকে দেখবার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে, তাকে ডেকে আনছি। বিভার প্রবেশ ও বৈরাগীকে প্ৰণাম ধনঞ্জয় । ভয় নেই দিদি, ভয় নেই, কোনো ভয় নেই । এই দেখ-না, আমাকে দেখ-না— আমি তার রাস্তার ছেলে— রাস্তার কোলে-কোলেই দিন কেটে গোল— দিনরাত্রি একেবারে ধুলোয় ধুলোময় হয়ে বেড়াই, মায়ের আদরে লাল হয়ে উঠি । আমার মায়ের ঐ ধুলোঘরে আজ তোমার নতুন নিমন্ত্রণ, কিন্তু মনে কোনো ভয় রেখো না । বিভা । বৈরাগী ঠাকুর, তুমি কোথায় যােচ্ছ । তুমি কি আমাদের সঙ্গে যাবে। ধনঞ্জয় । কোথায় যাব সে কথা আমার মনেই থাকে না । ঐ রাস্তাই তো আমাকে মজিয়েছে । এই মাটি দেখলে আমাকে মাটি করে দেয় । क्रोन्म সারিগানের সুর গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ আমার মন ভুলায় রে । ওরে কার পানে মন হাত বাড়িয়ে লুটিয়ে যায় ধুলায় রে । ও যে আমায় ঘরের বাহির করে, পায়ে পায়ে পায়ে ধরেও যে কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে যায় রে কোন চুলায় রে । ও যে কোন বঁাকে কী ধন দেখাবে, কোনখানে কী দায় ঠেকাবে, কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে— ভেবেই না কুলায় রে । উন্মুম কুর, তুমি কি ভাবদ্ধ বিভা আমার পথের সঙ্গিনী। একে আমি ওর শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে যাচিছ। ধনঞ্জয় । বেশ, বেশ, হরি যেখানে নিয়ে যান। সেইখানেই ভালো । দেখি তিনি কোনখানে পৌছিয়ে দেন, আমিও সঙ্গে আছি । কোনো ভয় নেই দিদি, কোনো ভয় নেই । [প্ৰস্থান বিভা । দাদা, ঐ-যে মোহন আসছে। ওর সঙ্গে আমি একটু আলাদা কথা কইতে চাই । উদয় । আচ্ছা, আমি একটু সরে যাচ্ছি। [প্ৰস্থান