পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V8S রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী চলেছে মানবযাত্রী যুগ হতে যুগান্তর-পানে, ঝড়ঝঞা-বজ্ৰপাতে, জ্বালায়ে ধরিয়া সাবধানে অন্তর-প্ৰদীপখানি । শুধু জানি, যে শুনেছে কানে তাহার আহবানগীত, ছুটেছে সে নিভীক পরানে সংকট-আবর্ত-মাঝে, দিয়েছে সে সর্ব বিসর্জন, নির্যাতন লয়েছে সে বক্ষ পাতি ; মৃত্যুর গর্জন শুনেছে সে সংগীতের মতো । দহিয়াছে অগ্নি তারে, বিদ্ধ করিয়াছে। শূল, ছিন্ন তারে করেছে কুঠারে, চিরজন্ম তারি লাগি জেলেছে সে হােমহুতাশন । --- শুনিয়াছি, তারি লাগি পথের ভিক্ষুক । মহাপ্ৰাণ সহিয়াছে পলে পলে প্ৰত্যহের কুশাঙ্কুর । -- তারি পদে মানী সঁপিয়াছে মান, ধনী সঁপিয়াছে ধন, বীর সঁপিয়াছে আত্মপ্ৰাণ । --- শুধু জানি সে বিশ্বপ্রিয়ার প্ৰেমে ক্ষুদ্রতারে দিয়া বলিদান বর্জিতে হইবে দূরে জীবনের সর্ব অসম্মান, সম্মুখে দাড়াতে হবে উন্নত মস্তক উচ্চে তুলি যে মস্তকে ভয় লেখে নাই লেখা, দাসত্বের ধূলি তঁমাকে নাই কলঙ্ক তিলক । তিন বৃহদারণ্যকে একটি আশ্চর্য বাণী আছে অথ যোহন্যাং দেবতাম উপাস্তে অন্যোহসীে অন্যোহহম অস্ত্রীতি ন স বেদ, যথা পশুরেবং স দেবানাম । যে মানুষ অন্য দেবতাকে উপাসনা করে সেই “দেবতা অন্য আর আমি অন্য’ এমন কথা ভাবে সে Сој Си којиši oteči »ICelje i অর্থাৎ সেই দেবতার কল্পনা মানুষকে আপনার বাইরে বন্দী করে রাখে ; তখন মানুষ আপন দেবতার দ্বারাই আপনি আত্মা হতে নির্বাসিত, অপমানিত । এই যেমন শোনা গেল উপনিষদে আবার সেই কথাই আপন ভাষায় বলছে নিরক্ষার অশাস্ত্ৰজ্ঞ বাউল । সে আপন দেবতাকে জানে আপনার মধ্যেই, তাকে বলে মনের মানুষ । বলে, “মনের মানুষ মনের মাঝে করো অন্বেষণ ।” মানুষের ইতিহাসে এমন অনেক ধর্মসম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়েছে যারা কাঠ-পাথর-পূজাকে বলেছে হীনতা এবং তাই নিয়ে তারা মারকটি করতে ছোটে । স্বীকার করি, কাঠ-পাথর বাইরের জিনিস,