পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెV রবীন্দ্র-রচনাবলী কিন্তু মরবই যে কবিশেখর, আজ হোক আর কাল হোক । কে বললে মহারাজ, মিথ্যা কথা । যখন দেখছি বেঁচে আছি তখন জানছি যে বঁচিবই ; যে আপনার সেই বাচাটাকে সব দিক থেকে যাচাই করে দেখলে না সে-ই বলে মরব—সে-ই বলে "নলিনীদলগত জলমতি তরলং তদ্বৎ জীবনমতিশয় চপলং ” কী বল হে কবি, জীবন চপল নয় ? চপল বই-কি, কিন্তু অনিত্য নয়। চপল জীবনটা চিরদিন চপলতা করতে করতেই চলবে। মহারাজ, আজ তুমি তার চপলতা বন্ধ করে মরবার পালা অভিনয় আরম্ভ করতে বসেছ । ঠিক বলছ কবি ? আমরা বঁচিবই ? বঁচিবই। যদি বঁচিবই তবে বাচার মতো করেই বঁাচতে হবে— কী বল । হা মহারাজ । প্রতিহারী ! কী মহারাজ । ডাকে, ডাকো, মন্ত্রীকে এখনই ডাকো । কী মহারাজ । মন্ত্রী, আমাকে এতক্ষণ বসিয়ে রেখেছ কেন । ব্যস্ত ছিলুম। কিসে । বিজয়বর্মণকে বিদায় করে দিতে । কী মুশকিল। বিদায় করবে কেন। যুদ্ধের পরামর্শ আছে যে । চীনের সম্রাটের দূতের জন্যে বাহনের ব্যবস্থা— কেন, বাহন কিসের । মহারাজের তো দর্শন হবে না, তাই তাকে ফিরিয়ে দেবার— মন্ত্রী, আশ্চর্য করলে দেখছি— রাজকাৰ্য কি এমনি করেই চলবে। হঠাৎ তোমার হল কী । তার পরে আমাদের কবিশেখরের বাসা ভাঙবার জন্যে লোকের সন্ধান করছিলুম— আর তো কেউ রাজি হয় না, কেবল দিঙনাগের বংশে যারা অলংকারের আর ব্যাকরণশাস্ত্রের টোল খুলেছেন তারা দলে দলে শাবল হাতে ছুটে আসছেন। সর্বনাশ! মন্ত্রী, পাগল হলে নাকি। কবিশেখরের বাসা ভেঙে দেবে ?