পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাল্গুনী S२१ ওরে হাসি রে হাসি ! ওই হাসি শোনা যাচ্ছে। বঁাচা গেল, এতক্ষণে একটা হাসি শোনা গেল । যেন গুমোটের ঘোমটা খুলে গেল । , এ যেন বৈশাখের এক পশলা বৃষ্টি । কার হাসি ভাই । শুনেই বুঝতে পারছিস নে, আমাদের চন্দ্রহাসের হাসি? কী আশ্চর্য হাসি ওর । যেন ঝরনার মতো, কালো পাথরটাকে ঠেলে নিয়ে চলে । যেন স্বর্যের আলো, কুয়াশার তাড়ক রাক্ষসীকে তলোয়ার দিয়ে টুকরো টুকরো করে কাটে । o r যাক আমাদের চৌপদীর ফাড় কাটল। এবার উঠে পড় । এবার কাজ ছাড়া কথা নেই— চরাচরমিদং সৰ্বং কীর্তির্যস্ত স জীবতি । ও আবার কী রকম কথা হল। ঈশানকে এখনও চৌপদীর ভূত ছাড়ে নি। কীর্তি ? নদী কি নিজের ফেনাকে গ্রাহ করে । কীর্তি তো আমাদের ফেন!— ছড়াতে ছড়াতে চলে যাব । ফিরে তাকবি না । এসো ভাই চন্দ্ৰহাস এসো, তোমার হাসিমুখ যে ! চন্দ্রহাস । বুড়োর রাস্তার সন্ধান পেয়েছি। কার কাছ থেকে । চন্দ্রহাস । এই বাউলের কাছ থেকে । ও কী । ও যে অন্ধ ! চন্দ্রহাস । সেইজন্যে ওকে রাস্তা খুজতে হয় না, ও ভিতর থেকে দেখতে পায়। কী হে ভাই, ঠিক নিয়ে যেতে পারবে তো ? বাউল। ঠিক নিয়ে যাব । কেমন ক’রে | বাউল। আমি যে পায়ের শব্দ শুনতে পাই । কান তো আমাদেরও আছে, কিন্তু— বাউল। আমি যে সব-দিয়ে শুনি— শুধু কান-দিয়ে না। চন্দ্রহাস। রাস্তায় যাকে জিজ্ঞাসা করি বুড়োর কথা শুনলেই আঁতকে ওঠে, কেবল দেখি এরই ভয় নেই। •