পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©83 রবীন্দ্র-রচনাবলী এইখানে গুটিকতক ব্যতিক্রমের কথা বলা আবশুক । ই উ যফলা ঋফল ক্ষ পরে থাকিলেও অভাবার্থসূচক অ-এর বিকার হয় না ; যথা, অকিঞ্চন অকুতোভয় অখ্যাতি অমৃত অক্ষয় । নিম্নলিখিত শব্দগুলি নিয়ম মানে না, অর্থাৎ ই উ যফল৷ ঋফল ইত্যাদি পরে ন৷ থাকা সত্ত্বেও ইহাদের আদ্যক্ষরবর্তী অ ‘ও’ হইয়া যায় ; মন্দ মন্ত্র মন্ত্রণ নখ মঙ্গল ব্রহ্ম । আমি এই প্রবন্ধে কেবল আদ্যক্ষরবর্তী আকার উচ্চারণের নিয়ম লিখিলাম । মধ্যাক্ষর বা শেষাক্ষরের নিয়ম অবধারণের অবসর পাই নাই। মধ্যাক্ষরে যে প্রথম অক্ষরের নিয়ম খাটে না, তাহা একটা উদাহরণ দিলেই বুঝা যাইবে । বল শব্দে ব-এর সহিত সংযুক্ত আকারের কোনো পরিবর্তন হয় না, কিন্তু কেবল শব্দের ব-এ হ্রস্ব ওকার লাগে। ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের নিয়মও সময়াভাবে বাহির করিতে পারি নাই। সাধারণের মনোযোগ আকর্ষণ করিয়া দেওয়াই আমার এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য । যদি কোনে অধ্যবসায়ী পাঠক রীতিমতো অন্বেষণ করিয়া এই-সকল নিয়ম নির্ধারণ করিতে পারেন, তবে আমাদের বাংলাব্যাকরণের একটি অভাব দূর হইয়া যায়। এখানে ইহাও বলা আবশ্বক যে, প্রকৃত বাংলাব্যাকরণ একখানিও প্রকাশিত হয় নাই। সংস্কৃতব্যাকরণের একটু ইতস্তত করিয়া তাহাকে বাংলাব্যাকরণ নাম দেওয়া হয়। বাংলাব্যাকরণের অভাব আছে, ইহা পূরণ করিবার জন্য ভাষাতত্ত্বানুরাগী লোকের যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত । ১ ২ ৯২