পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ᎼᏬ n রবীন্দ্র-রচনাবলী চক্ষে পড়ে না। যে-শক্তি কাজ করিতেছে, তাহা অলক্ষ্যে সমাজ গড়িয়া তোলে বলিয়া তাহাকে প্রতিদিন দেখিতে পাওয়া যায় না। বিশ-পঞ্চাশ বৎসরে ভাগ করিয়া দেখিলে তবেই তাহার কাজের পরিচয় পাওয়া যায়। আমরা যখন হতাশের আক্ষেপ গাহিতেছি, তখনও সে বিনা-জবাবদিহিতে কাজ করিয়া যাইতেছে। আমরা পর-শিক্ষাবলেই পর-শিক্ষাপাশ হইতে নিজেকে কিরূপে ধীরে ধীরে এক-এক পাক করিয়া মুক্ত করিতেছি তাহা পঞ্চাশ-বৎসর-পরবর্তী বঙ্গদর্শনের সম্পাদক অনেকটা পরিষ্কার করিয়া দেখিতে পাইবেন । § তখনও যে সমস্তটা সম্পাদকের সম্পূর্ণ মনোমতোই হইবে, তাহা নহে ; কারণ, সংসারের হতাশের আক্ষেপ অমর,—কিন্তু ত্রিবেদীমহাশয়ের পুস্তিকার সহিত মিলাইয়া স্বসময়ের আলোচনা করিলে তিনি অনেকটা পরিমাণে সাত্ত্বনা পাইবেন, এ কথা তাহার পূর্ববর্তী সম্পাদক জোর করিয়া বলিতে পারেন। >S)obr আলোচনা "নকলের নাকাল সম্বন্ধে ‘নকলের নাকাল’ প্রবন্ধে লেখক সাহেবিয়ানার নকল লইয়া ক্ষোভ প্রকাশ করিয়াছেন। সমস্ত জাতি ও সমাজের মধ্যে চিরকাল অনুকরণশক্তি কাজ করিয়া আসিতেছে । খ্যাতনাম ইংরেজ লেখক ব্যাজটু সাহেব তাহার ফিজিকস এণ্ড পলিটিকস গ্রন্থে জাতিনির্মাণ কার্যে এই অনুকরণশক্তির ক্রিয়া বর্ণন করিয়াছেন। গোড়ায় একটা জাতি কী করিয়া বিশেষ একটা প্রকৃতি লাভ করে, তাহা নির্ণয় করা শক্ত । কিন্তু তাহার পরে কালে কালে তাহার যে পরিবর্তনের ধারা চলিয়া আসে, প্রধানত অনুকরণই তাহার মূল। ইংলণ্ডে রাজী অ্যানের রাজত্বকালে ইংরেজ সমাজ সাহিত্য আচার ব্যবহার যেরূপ ছিল, জজ-রাজগণের সময় তাহার অনেক পরিবর্তন হইয়াছিল। অথচ জ্ঞানবিজ্ঞানের নূতন প্রসার এমন-কিছু হয় নাই, যাহাতে অবস্থাপরিবর্তনের গুরুতর কারণ কিছু পাওয়া যায়। ব্যাজটু সাহেব বলেন, এই-সকল পরিবর্তন তুচ্ছ অনুকরণের দ্বারা সাধিত হয়। একজন কিছু-একটা বদল করে, হঠাৎ কী কারণে সেটা আর-পাচজনের লাগিয়া যায়,