পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q"8 রবীন্দ্র-রচনাবলী ঠিক একরূপ জিনিস নহে। অষ্টম সংজ্ঞায় লেখক শ্ৰীযুক্ত মহেন্দ্রনাথ রায় যে বলিয়াছেন, সেয়ান হইয়া বোকা সাজ, ইহাই আমার ঠিক বোধ হয় । জানিয়া না-জানার ভাব প্রকাশ করিলেই হইবে না, সেই সঙ্গে প্রকাশ করিতে হইবে অামি যেন নির্বোধ, আমার যেন বুঝিবার শক্তিই নাই। ষষ্ঠ এবং সপ্তম সংজ্ঞাতেও কতকটা এই ভাব প্রকাশ পাইয়াছে, কিন্তু তেমন স্পষ্ট হয় নাই। নবম ও দশম সংজ্ঞা ঠিক হইয়াছে। কিন্তু অষ্টম হইতে দশম সংজ্ঞাতে বোকা, ছেলেমি, হাবা শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে ; এই শব্দগুলি সংজ্ঞানির্দেশযোগ্য । অর্থাৎ হাবামি, বোকামি ও ছেলেমির বিশেষ লক্ষণ কী তাহা মনোযোগসহকারে আলোচনা করিয়া দেখিবার বিষয় । এইজন্ত একাদশ সংজ্ঞার লেখক যে ইচ্ছাকৃত অজ্ঞতার ভাণের সঙ্গে ‘মিথ্যা সরলতা’ শবদ যোগ করিয়া দিয়াছেন, তাহাতে ন্তাকামি শব্দের অর্থ পরিষ্কার হইয়াছে। অজ্ঞতা এবং সরলতা উভয়ের ভাণ থাকিলে তবে দ্যাকামি হইতে পারে। আমাদের পুরস্কৃত সংজ্ঞালেখক লিথিয়াছেন, “ন্তাকামি বলিতে সাধারণত জানিয়া শুনিয়া বোকা সাজার ভাব বুঝায়” পরে দ্বিতীয় পদে তাহার ব্যাখ্যা করিয়া বলিয়াছেন, “যেন কিছু জানে না, যেন কিছু বুঝে না এই ভাবের নাম দ্যাকামি।” যেন কিছু জানে না, যেন কিছু বুঝে না বলিতে লোকটা যেন নেহাত হাবা, নিতান্ত থোকা এইরূপ বুঝায়, লোকটা যেন কিছু বুঝেই না, এবং তাহাকে বুঝাইবার উপায়ও নাই। আহলাদে ১ । স্বার্থের জন্ত বিবেচনারহিত । ২ । যাহারা পরিমাণাধিক আহলাদে সর্বদাই মত্ত । ৩ । যে সকল-ত’তেই অষ্ঠায়রপে আমোদ চায়, অথবা যে হক না হক্‌ ৰ্দাত বের করে । ৪ । অযথা আনন্দ বা অভিমান -প্রকাশক । ৫ । অন্তকে অসন্তুষ্ট করিয়া যে নিজে হাসে । ৬ । যে সর্বদা আহলাদ করিয়া বেড়ায় । ৭ । কী সময়ে কী অসময়ে যে আহলাদ প্রকাশ করে । ৮ । যে অভিমানী অল্পে অধৈর্য হয় । ৯ । যে অনুপযুক্ত সময়েও আবদারী । ১• । সাধের গোপাল নীলমণি । আমার বোধ হয়, যে-ব্যক্তি নিজেকে জগতের আদুরে ছেলে মনে করে তাহাকে আহলাদে বলে ; প্রশ্রয়দাত্রী মায়ের কাছে আদুরে ছেলেরা যেরূপ ব্যবহার করে যে-ব্যক্তি সকল জায়গাতেই কতকটা সেইরূপ ব্যবহার করিতে যায়। অর্থাৎ যে-ব্যক্তি সময় অসময় পাত্রাপাত্র বিচার না করিয়া সর্বত্র আবদার করিতে যায়, সর্বত্রই দাত বাহির