পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬১৯

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ &パッ রবীন্দ্র-রচনাবলী তার রসভোগের তৃষ্ণা, তখন তার লক্ষ্য প্রেয়। তারপরে মকুন্তত্বের উদ্বোধনের সঙ্গে তার দ্বিধা আসে ; তখন মুখ এবং দুঃখ, ভালো এবং মন্দ, এই দুই বিরোধের সমাধান সে খোজে,— তখন দুঃখকে সে এড়ায় না, মৃত্যুকে সে ডরায় না,— সেই অবস্থায় শিবং, তখন তার লক্ষ্য শ্রেয়। কিন্তু এইখানেই শেষ নয়— শেষ হচ্ছে প্রেম, আনন্দ । সেখানে সুখ ও দুঃখের, ভোগও ত্যাগের, জীবনও মৃত্যুর গঙ্গাযমুনা-সংগম। সেখানে অদ্বৈতং । সেখানে কেবল যে বিচ্ছেদের ও বিরোধের সাগর পার হওয়া তা নয়— সেখানে তরী থেকে তীরে ওঠা । সেখানে যে আনন্দ সে তো দুঃখের ঐকাস্তিক নিবৃত্তিতে নয়, দুঃখের ঐকান্তিক চরিতার্থতায় । ধৰ্মবোধের এই যে যাত্রা— এর প্রথমে জীবন, তার পরে মৃত্যু, তার পরে অমৃত। মানুষ সেই অমৃতের অধিকার লাভ করেছে। কেননা জীবের মধ্যে মানুষই শ্রেয়ের ক্ষুরধারনিশিত দুর্গম পথে দুঃখকে মৃত্যুকে স্বীকার করেছে। সে সাবিত্রীর মতো যমের হাত থেকে আপন সত্যকে ফিরিয়ে এনেছে। সে স্বর্গ থেকে মর্তলোকে ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তবেই অমৃতলোককে আপনার করতে পেরেছে। ধর্মই মানুষকে এই দ্বন্দ্বের তুফান পার করিয়ে দিয়ে, এই অদ্বৈতে, অমৃতে, আনন্দে, প্রেমে উত্তীর্ণ করিয়ে দেয় । যারা মনে করে তুফানকে এড়িয়ে পালানোই মুক্তি— তারা পারে যাবে কী করে। সেইজন্যেই তো মানুষ প্রার্থনা করে,— অসতো মা সদগময়, তমসে মা জোতিগময়, মৃত্যোর্মামৃতং গময় । ‘গময় এই কথার মানে এই যে, পথ পেরিয়ে যেতে হবে, পথ এড়িয়ে যাবার জো নেই।” শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর ছাত্রদের অধ্যাপনার সময়ে (১৩২৮) রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং বলাকার অনেকগুলি কবিতার যে-আলোচনা করিয়াছিলেন শ্রীপ্রদ্যোতকুমার সেনগুপ্ত -কৃত তাহার অস্থলেখন ১৩২৯-৩০ সালের শান্তিনিকেতন’ পত্রিকায় নিম্নমুদ্রিত ক্রম অনুসারে প্রকাশিত হইয়াছিল : صے" ১৩২৯ : জ্যৈষ্ঠ–১, ২, ৩, ৪ ; আষাঢ়—৫ ; অগ্রহায়ণ–১৭, ১৮ ; পৌষ—৩১ ; মাঘ —২৪, ৩০ ; ফাঙ্কন—১৪ ; চৈত্র—৬ । ১৩৩০ : বৈশাখ—১৬ ; আষাঢ়—২২ ; ভাদ্ৰ—২৩ ; আশ্বিন—৩২, ৩৩ ; কণতিক—৩৪, ৩৫ ; অগ্রহায়ণ—২৮, ২৯ ; পৌষ—৩১, و توانا ,و كا মাঘ– ৪৫ ৷ এই আলোচনায় স্থানে স্থানে বলাকার কবিতাগুলি সম্বন্ধে সাধারণভাবে কবি যাহা বলিয়াছিলেন, তাহার প্রাসঙ্গিক অংশগুলি সংক্ষেপে উদ্ধৃত হইল : এই কবিতাগুলি প্রথমে সবুজপত্রের তাগিদে লিখতে আরম্ভ করি। পরে চারপাঁচটি কবিতা রামগড়ে থাকতে লিখেছিলাম। তখন আমার প্রাণের মধ্যে একটা ব্যথা চলছিল এবং সে-সময়ে পৃথিবীময় একটা ভাঙাচোরার আয়োজন হচ্ছিল। এও জ সাহেব এই সময়ে আমার সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন তিনি আমার তখনকার মানসিক অবস্থার কথা জানেন । এই কবিতাগুলি ধারাবাহিকভাবে একটার পর একটা