পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় ৩০ ১ বাকুড়ার দুর্ভিক্ষ নিবারণের সাহায্যে ১৩২২ সালের মাঘ মাসে কলিকাতায় ফাঙ্কনী নাটকের অভিনয় হয়। ফাল্গুনীর প্রচলিত সংস্করণের সূচনা’ অংশ সেই উপলক্ষে রচিত হয় (মাঘ ১৩২২ ) এবং বৈরাগ্য সাধন নামে ১৩২২ সালের মাঘ মাসের সবুজ পত্রে প্রকাশিত হয়। বর্তমান সংস্করণের সূচনা অংশে ‘পথ দিয়ে কে যায় গো চলে’ গানটি সবুজপত্রের পাঠ-অনুযায়ী সম্পূর্ণ উদ্ধৃত হইয়াছে। ১৩২২ সালের এই অভিনয়ের অব্যবহিত পূর্বে শাস্তিনিকেতন হইতে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে লেখা রবীন্দ্রনাথের কয়েকটিপত্রে এবং রবীন্দ্রনাথ-কৃত অভিনয়স্থচীর একটি অসম্পূর্ণ খসড়া হইতে ফাল্গুনীর অভিনয় ও স্বচনা-সংযোজন-সংক্রান্ত অনেক তথ্য জানা যায়। পত্র কয়খানি শ্রপুলিনবিহারী সেনের সংগ্রহে আছে ; প্রাসঙ্গিক অংশগুলি নিম্নে মুদ্রিত হইল । > গগন, ফাল্গুনীর সম্বন্ধে ভাবনার কথা এই যে, ও জিনিসটি অত্যন্ত delicate— , ওর একটু স্বত্র ছিন্ন হয়ে গেলেই ওর থেই খুজে পাওয়া শক্ত হয়। যারা অভিনয় আরম্ভ হবার কিছু পরে আসবে তারা একেবারেই আগাগোড়া এ-জিনিসটার মানে বুঝতে পারবে না। অভিনয় শুরু হবার পরে প্রোগ্রাম পড়বারও সময় থাকবে না, কেননা একবারও যবনিকা পড়বে না। তাই গোড়ায় খুব ছোট একটা-কিছু যদি করা যায় তা হলেও চলে— তা হলে অন্তত লোকজনের আনাগোনাটাও তার উপর দিয়ে কেটে যায়। আর-একটা কথা – অভিনয় হবার দিনের আগে যদি প্রোগ্রাম বিক্রি হয় তা হলে সেটাতে করে বিজ্ঞাপনও হবে, শ্রোতাদের বোঝবারও সুবিধা হতে পারবে। এটা ভেবে দেখো । প্রোগ্রামের নাম দিয়ো নাট্যবিষয়সার । দাদার চৌপদীগুলো প্রোগ্রামে ছাপানো থাকলে মন্দ হয় না। যে যে দৃশ্বে তার যে যে চৌপদী আছে সেই সেই দৃশ্বের গানগুলি যেমন ছাপা হবে অমনি তারই সঙ্গে ‘দাদার চৌপদী’ এই heading দিয়ে চৌপদীগুলোও ছাপিয়ে দিয়ে। তার কারণ, চৌপদীগুলো stage-এ প্রথমটা শোনবামাত্রই তার মানে বোঝা যায় না। চেষ্টা করছি আমাদের শিশুগাইয়ের দল বাড়িয়ে তুলতে। দু-একটি বড়ো মেয়ের গলাও পাবার চেষ্টা করছি— এখানে কিছুকাল এসে থেকে শিখে যেতে পারে এমন বেশ গলাওয়ালা মেয়ের সন্ধান আছে কি । ছেলের দলের মধ্যে দু-চারটি মেয়েকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলে বেশ দেখতে হবে । রাস্তা দিয়ে পথিক-চলাচলের by play-টা তোমরা করে নিতে পারবে ? সমস্তক্ষণই আমাদের অভিনয়ের পিছন দিয়ে কেবল এইরকম যাতায়াত চালালে বেশ হয় । ...ফাল্গুনীর কথাটা মনের মধ্যে সর্বদাই জাগিয়ে রেখো— ভাবতে ভাবতে ক্রমে ক্রমে এক-একটা suggestion মনে এসে পড়বে । চোখ এবং কান এবং দুয়েরই একেবারে পেট ভরিয়ে তুলতে হবে। তার পরে মানে বুঝতে না পারে না-ই পারলে— বুঝিয়ে দেওয়ার চেয়ে মজিয়ে দেওয়াটাই দরকার।