পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS झोम्-झन्तर्वनी সে কহিল, “আমাদের চারি দিকে শক্ত আছে ঘের 9Sae-bice, সে তুমি নিশ্চিত জান ।” আমি শুধালেম, “তার মানে ?” সে কহিল, “আমরা পুষি না মোহ প্ৰাণে, কেবল বিশুদ্ধ ভালোবাসি ।” কহিলাম হাসি, “আমি যাহা বলেছিনু সে-কথাটা মস্ত বড়ো বটে, কিন্তু তবু লাগে না সে তোমার এ স্পর্ধার নিকটে । মোহ কি কিছুই নেই রমণীর প্ৰেমে ।” সে কহিল একটুকু থেমে, * নেই বলিলেই হয় । এ কথা নিশ্চিত জোর করে বলিবইআমরা কাঙালি কীভূ নাই ।” আমি কহিলাম, “ভদ্রে, তা হলে তো পুরুষের জিত ।” “কোন শুনি” মাথাটা বঁকিয়ে দিয়ে বলিল তরুণী । আমি কহিলাম, “যদি প্ৰেম হয় অমৃতকলস, মোহ তবে রসনার রস । সে সুধার পূর্ণ স্বাদ থেকে মোহহীন রমণীরে প্রবঞ্চিত বলো করেছে কে । আনন্দিত হই দেখে তোমার লাবণ্যভরা কায়া, তাহার তো বারো-আনা আমারি অন্তরবাসী মায়া । প্ৰেম আর মোহে একেবারে বিরুদ্ধ কি দোহে । আকাশের আলো r বিপরীতে-ভাগ-করা সে কি সাদা কালো । ওই আলো আপনার পূর্ণতারে চুর্ণ করে দিকে দিগন্তরে, বৰ্ণে বর্ণে তুণে শস্যে পুষ্পে পর্ণে, পাখির পাখায় আর আকাশের নীলে, চোখ ভোলাবার মোহ মেলে দেয় সর্বত্র নিখিলে । অভাব যেখানে এই মন-ভোলাবার সেইখানে সৃষ্টিকর্তা বিধাতার হার । এমন লজার কথা বলিতেও নাইতোমরা ভোল না। শুধু ভুলি আমরাই । এই কথা স্পষ্ট দিনু কয়ে, সৃষ্টি কাভু নাহি ঘটে একেবারে বিশুদ্ধোরে লয়ে । পূর্ণতা আপন কেন্দ্ৰে স্তৱন্ধ হয়ে থাকে, কারেও কোথাও নাহি ডাকে ।