পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাত্রি অভিভূত ধরণীর দীপ-নেভা তোরণদুয়ারে আসে রাত্রি, আধা অন্ধ, আধা বোবা, যুগারম্ভসৃষ্টিশালে অসমাপ্তি পুঞ্জীভূত যেন নিদ্রার মায়ায় । হয় নি নিশ্চিত ভাগ সত্যের মিথ্যার, ভালোমন্দ-যাচাইয়ের তুলাদণ্ডে বাটখারা ভুলের ওজনে । কামনার যে পাত্রটি দিনে ছিল আলোয় লুকানো আঁধার তাহারে টেনে আনে আধ-দেখা কটাক্ষে ইঙ্গিতে । ছায়া করে আনাগোনা সংশয়ের মুখোশ-পরানো, মোহ আসে কালো মূর্তি লাল রঙে ঐকে, তপস্বীরে করে যে বিদ্রুপ । বেড়াজাল হাতে নিয়ে সঞ্চারে আদিম মায়াবিনী যাবে গুপ্ত গুহা হতে গোধূলির ধূসর প্রান্তরে দাসুয় এসে দিবসের রাজদণ্ড কেড়ে নিয়ে যায় । বিশ্বনাট্যে প্ৰথম অঙ্কের অনিশ্চিত প্ৰকাশের যবনিকা ছিন্ন করে এসেছিল দিন, নির্বারিত করেছিল বিশ্বের চেতনা আপনার নিঃসংশয় পরিচয় । আবার সে আচ্ছাদন মাঝে মাঝে নেমে আসে। স্বপ্রের সংকেতে । আবিল বুদ্ধির স্রোতে ক্ষণিকের মতো মেতে ওঠে ফেনার নর্তন । প্ৰবৃত্তির হালে বসে কর্ণধার করে উদভ্ৰান্ত চালনা তন্দ্ৰাবিষ্ট চোখে । নিজেরে ধিককার দিয়ে মন ব’লে ওঠে, “নহি নহি আমি নহি অপূর্ণ সৃষ্টির সমুদ্রের পঙ্কলোকে অন্ধ তলচর অর্ধস্ফুট শক্তি যার বিহবলতা—বিলাসী মাতাল তরলে নিমগ্ন অনুক্ষণ । | 8 (