পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§paffදි SVeo. লোকদেরই পাতে ।” বাই জোভ, সূক্ষ্ম বটে ! শৈল । আর কি কোনো কথা নেই তোমাদের । ক্ষিতীশবাবু শুনতে পাবেন যে । সতীশ । ভয় নেই, ওখানে ফোয়ারা ছুটছে, বাতাস উলটাে দিকে, শোনা যাবে না । অৰ্চনা । আচ্ছা, তোমরা সব তাস খেলো, টেনিস খেলতে যাও, ঐ মানুষটার সঙ্গে হিসেব চুকিয়ে আসি গে । অৰ্চনা প্লেটে খাবার সাজিয়ে নিয়ে গেল ক্ষিতীশের কাছে । দোহারা গড়নের দেহ, সাজে-সজ্জায় কিছু অযত্ন আছে, হাসিখুশি ঢলঢলে মুখ, আয়ু পশ্চিমের দিকে এক ডিগ্রি হেলেছে । অৰ্চনা । ক্ষিতীশবাবু, পালিয়ে বসে আছেন আমাদের কাছ থেকে তার মানে বুঝতে পারি, কিন্তু খাবার টেবিলটাকে অস্পশ্য করলেন কোন দোষে । নিরাকার আইডিয়ায় আপনারা অভ্যস্ত, নিরাহার ভোজও কি তাই । আমরা বঙ্গনারী বঙ্গসাহিত্যের সেবার ভার পেয়েছি যে দিকটাতে সে দিকে আপনাদের পাকযন্ত্র । ক্ষিতীশ । দেবী, আমরা জোগাই রসাত্মক বাক্য, তা নিয়ে তর্ক ওঠে ; আপনারা দেন রসাত্মক বস্তু, ওটা অস্তুরে গ্রহণ করতে মতান্তর ঘটে না । অৰ্চনা। কী চমৎকার । আমি যখন থালায় কেক সন্দেশ গোছাচ্ছিলুম। আপনি ততক্ষণ কথাটা বানিয়ে নিচ্ছিলেন । সাত জন্ম উপোস করে থাকলেও আমার মুখ দিয়ে এমন ঝকঝকে কথাটা বেরত না । তা যাক গে ; পরিচয় নেই, তবু এলুম কাছে, কিছু মনে করবেন না । পরিচয় দেবার মতো নেই বিশেষ কিছু। বালিগঞ্জ থেকে টালিগঞ্জে যাবার ভ্রমণবৃত্তান্তও কোনো মাসিকপত্রে আজ পর্যন্ত ছাপাই নি। আমার নাম অৰ্চনা সেন । ঐ-যে অপরিচিত ছোটাে মেয়েটি বেণী দুলিয়ে বেড়াচ্ছে, আমি তারই অখ্যাত কাকী । ক্ষিতীশ । এবার তা হলে আমার পরিচয়টাঅৰ্চনা । বলেন কী । পাড়া গেয়ে ঠাওরালেন আমাকে ? শেয়ালদ-স্টেশনে কি গাইড রাখতে হয় চেচিয়ে জানাতে যে কলকাতা শহরটা রাজধানী । এই পরশুদিন পড়েছি আপনার “বেমানান গল্পটা ৷ পড়ে হেসে মরি। আর-কি ৷৷ ও কী ! প্ৰশংসা শুনতে আজও আপনার লজা বোধ হয় ! খাওয়া বন্ধ করলেন যে ? আচ্ছা, সত্যি বলুন, নিশ্চয় ঘরের লোক কাউকে লক্ষ্য করে লিখেছেন । রক্তের যোগ না থাকলে আমন অদ্ভুত সৃষ্টি বানানো যায় না । ঐ-যে, যে জায়গাটাতে মিস্টার কিষেণ গাপ্টিা বি. এ. ক্যান্টােব, মিস লোটিকার পিঠের দিকের জামার ফাক দিয়ে আঙটি ফেলে দিয়ে খানাতল্লাশির দাবি করে হাে-হাে বাধিয়ে দিলে। আমার বন্ধুরা সবাই পড়ে বললে, ম্যাচুলেস- বঙ্গসাহিত্যে এ জায়গাটার দেশলাই মেলে না, একটু পোড়াকাঠিও না । আপনার লেখা ভয়ানক রিয়লিস্টিক ক্ষিতীশবাবু । ভয় হয় আপনার সামনে দাড়াতে । ক্ষিতীশ । আমাদের দুজনের মধ্যে কে বেশি ভয়ংকর, বিচার করবেন বিধার্তাপুরুষ । অৰ্চনা । না, ঠাট্টা করবেন না । সিঙাড়াটা শেষ করে ফেলুন। আপনি ওস্তাদ, ঠাট্টায় আপনার সঙ্গে পারব না । মোস্ট ইন্টারেস্টিং আপনার বইখানা । এমন-সব মানুষ কোথাও দেখা যায় না। ঐ-যে মেয়েটা কী তার নাম— কথায় কথায় হাঁপিয়ে উঠে বলে, মাই আইজ, ও গড লাজুক ছেলে স্যান্ডেলের সংকোচ ভাঙবার জন্যে নিজে মোটর হাকিয়ে ইচ্ছে করে গাড়িটা ফেললে খাদে, মতলব ছিল স্যান্ডেলকে দুই হাতে তুলে পতিতোদ্ধার করবে। হবি তো হা স্যান্ডেলের হাতে হল কম্পউন্ড ফ্র্যাকচার। কী ড্রামাটিক, রিয়ালিজমের চূড়ান্ত ! ভালোবাসার এতবড়ো আধুনিক পদ্ধতি বেদব্যাসের জানা ছিল না । ভেবে দেখুন, সুভদ্রার কত বড়ো চান্স মারা গেল, আর অর্জনেরও কন্ডিজ গেল বেঁচে । ক্ষিতীশ । কম মডারন নন। আপনি । আমার মতো নির্লজকেও লিজা দিতে পারেন । অৰ্চনা । দোহাই ক্ষিতীশবাবু, বিনয় করবেন না । আপনি নির্লজ ! লাজায় গলা দিয়ে সন্দেশ KBDLLS DD SS DDCu BK BLBLrLS > N > br