পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRbr SR রবীন্দ্র-রচনাবলী সতীশ । কিংখাব ! ভাবী লক্ষ্মীর আসন-রচনা ? শচীন । ঠিক তাই । সতীশ । আশ্চর্য দূরদর্শিতাশচীন । না হে, অদূরদর্শিতা প্রমাণ করে দেব অবিলম্বে । শৈলের প্রবেশ শৈল । সব প্ৰস্তুত, আসুন আপনারা । দ্বিতীয় দৃশ্য বারান্দায় সোমশংকর । গহনার বাক্স খুলে জহুরি গহনা দেখাচ্ছে। কাপড়ের গাঠরি নিয়ে অপেক্ষা করছে। কাশ্মীরী দোকানদার । বঁাশরি। কিছু বলবার আছে। সোমশংকর জহুরি ও কাশ্মীরীকে ইঙ্গিতে বিদায় করলে । সোমশংকর। ভেবেছিলুম আজই যাব তোমার কাছে। বঁাশরি। ও-সব কথা থাক । ভয় নেই, কান্নাকাটি করতে আসি নি। তবু আর কিছু না হােক তোমার ভাবনা ভাববার অধিকার একদিন দিয়েছ। আমাকে । তাই একটা কথা জিজ্ঞাসা করি।- জান সুষমা তোমাকে ভালোবাসে না ? A. সোমশংকর । জানি । বঁাশরি । তাতে তোমার কিছুই যায় আসে না । সোমশংকর । কিছুই না । বঁশরি । তা হলে সংসারযাত্ৰাটা কিরকম হবে । সোমশংকর । সংসারযাত্রার কথা ভাবছিই নে । বাশরি । তবে কিসের কথা ভাৰছ । সোমশংকর । একমাত্র সুষমার কথা । বঁাশরি। অর্থাৎ ভাবছি, তোমাকে ভালো না বেসেও কী করে সুখী হবে ঐ মেয়ে । সোেমশংকর । না, তা নয় । সুখী হবার কথা সুষম ভাবে না— ভালোবাসারও দরকার নেই তার । বঁাশরি । কিসের দরকার আছে তার, টাকার ? সোমশংকর । তোমার যোগ্য কথা হল না, বাশি । বাঁশরি । আচ্ছা, ভুল করেছি। কিন্তু, প্রশ্নটার উত্তর বাকি । কিসের দরকার আছে সুষমার । সোমশংকর । ওর একটি ব্ৰত আছে । ওর জীবনে সমস্ত দরকার তাই নিয়ে, তাকে সাধ্যমত সার্থক * WA:6 SV | বঁাশরি। ওর ব্ৰত আগে, তারই পশ্চাতে তোমার- পুরুষের মতো শোনাচ্ছে না, এ কথা ক্ষত্ৰিয়ের মতো নয়ই। এতবড়ো পুরুষকে মন্ত্ৰ পড়িয়েছে। ঐ সন্ন্যাসী । বুদ্ধিকে দিয়েছে ঘোলা করে, দৃষ্টিকে দিয়েছে চাপা । শুনলুম সব, ভালো হল । গেল আমার শ্রদ্ধা ভেঙ্গে, গেল আমার বন্ধন ছিড়ে । বয়স্ক শিশুকে মানুষ করবার কাজ আমার নয়, সে-কাজের ভার সম্পূর্ণ দিলেম ছেড়ে ঐ মেয়ের হাতে । পুরন্দরের প্রবেশ সোমশংকর প্রণাম করলে, অগ্নিশিখার মতো বঁাশরি উঠে দাড়াল তার সামনে । বঁাশরি। আজ রাগ করবেন না ; ধৈৰ্য ধরবেন, কিছু প্রশ্ন করব । [পুরন্দরের ইঙ্গিতে সোেমশংকরের প্রস্থান