পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিত্যের পথে 8°创 অপর পক্ষে, যে-প্ৰকাশচেষ্টার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপন প্রয়োজনের রূপকে নয়, বিশুদ্ধ আনন্দরাপকে ব্যক্ত করা, সেই চেষ্টারই সাহিত্যগত ফলকে আমি রসসাহিত্য নাম দিয়েছি । বেঁচে থাকবার জন্যে আমাদের যে-মূলধন আছে তারই একটা উদ্যবৃত্ত অংশকে নিয়ে সাহিত্যে আমরা জীবন-ব্যবসায়েরই নকল করে থাকি, এ কথা বলতে তো মন সায় দেয় না । কবিতার বিষয়টি যাই হোক-না কেন, এমন-কি, সে যদি দৈনিক একটা তুচ্ছ ব্যাপারই হয়, তবু সেই বিষয়টিকে শব্দচিত্রে DBDBDBDS BB BDDM DBB DDL OL BBBBD DDD S বিদ্যাপতি লিখছেন যব গোধূলিসময় বেলি ধনি মন্দিরবাহির ভেলি, নব জলধরে বিজুরিদ্রোহা দ্বন্দ্ব পসারি গেলি । গোধূলিবেলায় পূজা শেষ করে বালিকা মন্দির থেকে বাহির হয়ে ঘরে ফেরে- আমাদের দেশে সংসার-ব্যাপারে এ ঘটনা প্ৰত্যহই ঘটে । এ কবিতা কি শব্দরচনার দ্বারা তারই পুনরাবৃত্তি । জীবন-ব্যবহারে যেটা ঘটে, ব্যবহারের দায়িত্বমুক্ত ভাবে সেইটোকেই কল্পনায় উপভোগ করাই কি এই কবিতার লক্ষ্য । তা কখনোই স্বীকার করতে পারি। নে । বস্তুত, মন্দির থেকে বালিকা বাহির হয়ে ঘরে চলেছে, এই বিষয়টি এই কবিতার প্রধান বস্তু নয়। এই বিষয়টিকে উপলক্ষমাত্র করে ছন্দে-বন্ধে বাক্যবিন্যাসে উপমা সংযোগে যে একটি সমগ্ৰ বস্তু তৈরি হয়ে উঠছে সেইটেই হচ্ছে আসল জিনিস । সে জিনিসটি মূল বিষয়ের অতীত, তা অনির্বচনীয়। ইংরেজ কবি কীট্রস একটি গ্ৰীক পূজাপাত্রকে উদ্দেশ্য করে কবিতা লিখেছেন। যে-শিল্পী সেই পাত্রকে রচনা করেছিল সে তো কেবলমাত্র একটি আধারকে রচনা করে নি । মন্দিরে অর্ঘ্য নিয়ে যাবার সুযোগ মাত্র ঘটাবার জন্যে এই পাত্রের সৃষ্টি নয়। অর্থাৎ, মানুষের প্রয়োজনকে রূপ দেওয়া এর উদ্দেশ্য ছিল না । প্রয়োজনসাধন এর দ্বারা নিশ্চয়ই হয়েছিল, কিন্তু প্ৰয়োজনের মধ্যেই এ নিঃশেষ হয় নি। তার থেকে এ অনেক স্বতন্ত্র, অনেক বড়ো। গ্ৰীক শিল্পী সুষমাকে, পূর্ণতার একটি আদর্শকে, প্ৰত্যক্ষতা দান করেছে ; রাপলোকে অপরাপকে ব্যক্ত করেছে। সে কোনো সংবাদ দেয় নি, বহিঃসংসারের কোনাে-কিছুর পুনরাবৃত্তি করে নি। অন্তরের অহেতুক আনন্দকে বাহিরে প্রত্যক্ষগোচর করার দ্বারা তাকে পর্যাপ্তি দান করবার যে-চেষ্টা তাকে খেলা না বলে। লীলা বলা যেতে পারে । সে হচ্ছে। আমাদের রূপ সৃষ্টি করবার বৃত্তি ; প্রয়োজনসাধনের বৃত্তি নয়। তাতে মানুষের নিত্যকর্মের, দৈনিক জীবনের সম্বন্ধ থাকতেও পারে । কিন্তু, সেটা অবান্তর । আমাদের আত্মার মধ্যে অখণ্ড ঐক্যের আদর্শ আছে। আমরা যা-কিছু জানি কোনো-না-কোনো ঐক্যসূত্রে জানি । কোনো জানা আপনাতেই একান্ত স্বতন্ত্র নয়। যেখানে দেখি আমাদের পাওয়া বা জানার অস্পষ্টতা সেখানে জানি, মিলিয়ে জানতে না পারাই তার কারণ । আমাদের আত্মার মধ্যে জ্ঞানে ভাবে এই-যে একের বিহার, সেই এক যখন লীলাময় হয়, যখন সে সৃষ্টির দ্বারা আনন্দ পেতে চায়, সে তখন এককে বাহিরে সুপরিস্ফুট করে তুলতে চায়। তখন বিষয়কে উপলক্ষ করে, উপাদানকে আশ্রয় করে একটি অখণ্ড এক ব্যক্ত হয়ে ওঠে। কাব্যে চিত্রে গীতে শিল্পকলায় গ্ৰীক শিল্পীর পূজাপাত্রে বিচিত্র রেখার আবর্তনে যখন আমরা পরিপূর্ণ এককে চরম রূপে দেখি, তখন আমাদের অন্তরাত্মার একের সঙ্গে বহির্লোকের একের মিলন হয়। যে-মানুষ অরসিক সে এই চরম এককে দেখতে পায় না ; সে কেবল উপাদানের দিক থেকে প্রয়োজনের দিক থেকে এর মূল্য নির্ধারণ করে - শারদ-চান্দ পােবন মন্দ ; বিপিনে বহল কুসুমগন্ধ, यूम मन्द्रि भालठी यूी মত্তমধুপভোরনী ।