পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

68 ब्रदोक्ष-द्रष्नावली নাই । এখন তাহাকে এই শিয্যটির মন জোগাইয়া চলিতে হয় । তাই যুদ্ধে বিগ্রহে, পরজাতির সহিত ব্যবহারে, য়ুরোপ যত৷-কিছু অন্যায় করিয়াছে খৃস্টসংঘ তাহাতে আপত্তি করে নাই। বরঞ্চ ধর্মকথার ফোড়ঙ দিয়া তাহাকে উপাদেয় করিয়া তুলিয়াছে। এ দিকে ক্ষত্ৰিয়ের তলোয়ার প্রায় বেবাক গলাইয়া ফেলিয়া লাঙলের ফলা তৈরি হইল । তাই ক্ষত্রিয়ের দল বেকার বসিয়া বৃথা গোফে চাড়া দিতেছে। তাহারা শেঠজির মালখানার দ্বারে দরোয়ানগিরি করিতেছে মাত্র। বৈশ্যই সব চেয়ে মাথা তুলিয়া উঠিল । এখন সেই ক্ষত্রিয়ে বৈশ্যে “অদ্য যুদ্ধ ত্বয়া ময়া” । দ্বাপর যুগে আমাদের হলধর বলরামদাদা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যোগ দেন নাই। কলিযুগে তার পরিপূর্ণ মদের ভাড়টিতে হাত পড়িবা মাত্র তিনি হুংকার দিয়া ছুটিয়াছেন”। এবারকার কুরুক্ষেত্ৰযুদ্ধের প্রধান সর্দার কৃষ্ণ নহেন, বলরাম । রক্তপাতে তার রুচি নাই- রাজতফেনোচ্ছিল। মদের টোক গিলিয়া এতকাল ধরিয়া তার নেশা কেবলই চড়িয়া উঠিতেছিল ; এবারকার এই আচমকা উৎপাতে সেই নেশা কিছু ছুটিতে পারে। কিন্তু আবার সময়কালে দ্বিগুণ বেগে মীেতাত জমিবে সে আশঙ্কা আছে । ইহার পরে আর-একটা লড়াই সামনে রহিল, সে বৈশ্যে শূদ্রে, মহাজনে মজুরে- কিছুদিন হইতে তার আয়োজন চলিতেছে। সেইটে চুকিলেই বর্তমান মনুর পালা শেষ হইয়া নূতন মন্বন্তর পড়িবে। বণিকে সৈনিকে লড়াই তো বাধিল কিন্তু এই লড়াইয়ের মূল কোথায় সেটা জিজ্ঞাসা করিবার বিষয় । সাবেক-কালের ইতিহাসে দেখা যায় যারা কারবারী তারা রাজশক্তির আশ্রয় পাইয়াছে, কখনো-বা প্রশ্রয় পাইয়াছে, কখনো-বা অত্যাচার ও অপমান সহিয়াছে কিন্তু লড়াইয়ের আসরে তাহাদিগকে নামিতে হয় নাই । সেকালে ধন এবং মান স্বতন্ত্র ছিল, কাজেই ব্যবসায়ীকে তখন কেহ খাতির করিত না, বরঞ্চ অবজ্ঞাই করিত । কেননা জিনিস লইয়া মানুষের মূল্য নহে, মানুষ লইয়াই মানুষের মূল্য । তাই যে কালে ক্ষত্রিয়েরা ছিল গণপতি এবং বৈশ্যেরা ছিল ধনপতি তখন তাহদের মধ্যে ঝগড়া ছিল না । তখন ঝগড়া ছিল ব্ৰাহ্মণ-ক্ষত্রিয়ে । কেননা তখন ব্ৰাহ্মণ তো কেবলমাত্র যাজন-যাজন অধ্যয়ন-অধ্যাপন লইয়া ছিল না- মানুষের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করিয়াছিল। তাই ক্ষত্ৰিয়-প্ৰভু ও ব্ৰহ্মাণ-প্ৰভুতে সর্বদাই ঠেলাঠেলি চলিত ; বশিষ্ঠে বিশ্বামিত্রে আপস করিয়া থাকা শক্ত। যুরোপেও রাজায় পোপে বাও-কষাকষির অন্ত ছিল না । কারবার জিনিসটা দেনাপাওনার জিনিস ; তাহাতে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েরই উভয়ের মন রাখিবার গরজ আছে। প্ৰভুত্ব জিনিসটা ঠিক তার উলটা, তাহাতে গরজ কেবল এক পক্ষের । তাহাতে এক পক্ষ বোঝা হইয়া চাপিয়া বসে, অন্য পক্ষই তাহা বহন করে । প্ৰভুত্ব জিনিসটা একটা ভার, মানুষের সহজ চলাচলের সম্বন্ধের মধ্যে একটা বাধা । এইজন্য প্ৰভুত্বই যতি-কিছু বড়ো বড়ো লড়াইয়ের মূল । বোঝা নামাইয়া ফেলিতে যদি না পারি অন্তত বোঝা সরাইতে না পারিলে বাচি না। পালকির বেহারিা তাই বার বার কঁধ বদল করে। মানুষের সমাজকেও এই প্ৰভুত্বের বোঝা লইয়া বার বার কাধি বদল করিতে হয়- কেননা তাহা তাহাকে বাহির হইতে চাপ দেয়। বোঝা অচল হইয়া থাকিতে চায় বলিয়াই মানুষের প্রাণশক্তি তাহাকে সচল করিয়া তোলে। MBBBDBDD BDD DYBSS DDD DDD DBBLLDLY DBBDB BB BBD DDBD DDSS ইতিপূর্বে মানুষের উপর প্রভুত্বচেষ্টা ব্ৰাহ্মণক্ষত্রিয়ের মধ্যেই বন্ধ ছিল- এই কারণে তখনকার যতী-কিছু শস্ত্রের ও শাস্ত্রের লড়াই তাহাদিগকে লইয়া । কারবারীরা হাটে মাঠে গোঠে ঘাটে ফিরিয়া বেড়াইত, লড়াইয়ের ধার ধারিতৃ না। সম্প্রতি পৃথিবীতে বৈশ্যরাজক যুগের পত্তন হইয়াছে। বাণিজ্য এখন আর নিছক বাণিজ্য নহে, সাম্রাজ্যের সঙ্গে একদিন তার গান্ধৰ্ব বিবাহ ঘটিয়া গেছে । এক সময়ে জিনিসই ছিল বৈশ্যের সম্পত্তি, এখন মানুষ তার সম্পত্তি হইয়াছে। এ সম্বন্ধে সাবেক-কালের সঙ্গে এখনকার কালের তফাত কী তাহা বুঝিয়া দেখা যাক । সে আমলে যেখানে