পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আকাশপ্ৰদীপ৷ মামি থাকেন, সোনার বরন ঘোমটাতে মুখ ঢাকা, আলতা পায়ে উমাকা । এইখানেতে ঘুঘুডাঙার খাটি খবর মেলে কুলতলাতে গেলে । সময় আমার গেছে বলেই জানার সুযোগ হল ‘কলুদ ফুল যে কাকে বলে, ওই যে থোলো থোলো আগাছা জঙ্গলে সবুজ অন্ধকারে যেন রোদের টুকরো জ্বলে । বেড়া আমার সব গিয়েছে টুটে ; পরের গোরু যেখান থেকে যখন খুশি ছুটে হাতার মধ্যে আসে ; আর কিছু তো পায় না, খিদে মেটায় শুকনো ঘাসে । আগে ছিল সাটুন বীজে বিলিতি মৌসুমি, এখন মরুভূমি । সাত পাড়াতে সাত কুলেতে নেইকো কোথাও কেউ মনিব যেটার, সেই কুকুরটা কেবলই ঘেউ-ঘেউ লাগায় আমার দ্বারে ; আমি বোঝাই তারে কত, ঘুম ছাড়া আর মিলবে না তো কিছু— শুনে সে লেজ নাড়ে, সঙ্গে বেড়ায় পিছু পিছু | অধিকারের দলিল তাহার দেহেই বর্তমান । দুর্ভাগ্যের নতুন হাওয়া-বদল করার স্থান এমনতরো মিলবে কোথায় । সময় গেছে তারই, সন্দেহ তার নেইকো একেবারেই । সময় আমার গিয়েছে, তাই গায়ের ছাগল চরাই ; রবিশস্যে ভরা ছিল, শূন্য এখন মরাই । খুদকুঁড়ো যা বাকি ছিল। ইদুরগুলো ঢুকে দিল কখন ফ্ৰকে । হাওয়ার ঠেলায় শব্দ করে আগলভাঙা দ্বার, সারাদিনে জনামাত্র নেইকো খরিদার । কালের অলস চরণপাতে ঘাস উঠেছে। ঘরে আসার বাকা গলিটাতে । চড়ুইপাখির জন্যে আমার খোলা অতিথিশালা । সন্ধে নামে পাতাঝরা শিমুলগাছের আগায়, আধ-ঘুমে আধ-জাগায় মন চলে যায় চিহ্নবিহীন পািসটারিটির পথে স্বপ্নমানোরীথে ;