Sb* রবীন্দ্র-রচনাবলী
গেল বহুদূরে, বনের মধ্যে মৃগয়ার জন্তে যে নির্জন রাজগৃহ আছে সেইখানে। কুয়াশায় শুকতারার মতো লজ্জায় সে অাচ্ছন্ন।
রাত্রি যখন দুইপ্রহর, আধোমুমে সে শুনতে পায় এক বীণাধ্বনির জার্তরাগিণী । স্বপ্নে বহুদূরের আভাস আসে। মনে হয়, এই স্থর চিরদিনের চেনা। চিরবিরহের সঞ্চিত অশ্র বুকের মধ্যে উছলে ওঠে।
সখী, আঁধারে একেলা ঘর মন মানে না। কিসের পিয়াসে কোথা যে যাবে সে, পথ জানে না।
ঝরঝর নীরে, নিবিড় তিমিরে, সজল সমীরে গো, যেন কার বাণী কভু প্রাণে আনে কভু আনে না।
রাতের পর রাত যায়। অন্ধকারে তরুতলে যে মানুষ ছায়ার মতো নাচে তাকে চোখে দেখি নে, তার হৃদয় দেখি— জনশূন্ত দেওদার-বনের দোলায়িত শাখায় যেন দক্ষিণ সমুদ্রের হাওয়ার হাহাকার। রানী মনে ভাবে, যখন সে কাছে এল তখন ছিল কৃষ্ণসন্ধ্যা । যখন চাদ উঠল তখন তার মালাখানি রইল, সে রইল না ।
যখন এসেছিলে অন্ধকারে চাদ ওঠে নি সিন্ধুপারে।
হে অজানা, তোমায় তবে জেনেছিলেম অনুভবে, গানে তোমার পরশখানি বেজেছিল প্রাণের তারে ।
তুমি গেলে যখন একলা চলে চাদ উঠেছে রাতের কোলে ।
তখন দেখি পথের কাছে মালা তোমার পড়ে আছে, বুঝেছিলেম অনুমানে এ কণ্ঠহার দিলে কারে ।
কী হল রাজমহিষীর। কোন হতাশের বিরহ তার বিরহ জাগিয়ে তোলে। কোন রাত-জাগা পাখি নিস্তব্ধ নীড়ের পাশ দিয়ে হুহু করে উড়ে যায়, তার পাখার শব্দে ঘুমন্ত পাখির পাখা উৎসুক হয়ে ওঠে যে।
বীণায় বাজতে থাকে কেদারা বেহাগ, বাজে কালাংড়া। আকাশে আকাশে
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৮
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
