শাপমোচন । ఏసి
তারাগুলি যেন তামসী তপস্বিনীর নীরব জপমন্ত্র। বীণাধানি যেন আজ আর বাইরে নেই ; এসেছে তার অস্তরের তন্তুতে তন্তুতে।
ওই বুঝি বাশি বাজে বনমাঝে কি মনোমাঝে।
বসন্ত বায় বহিছে কোথায়, কোথায় ফুটেছে ফুল, বলে গো সজনি, এ স্থখরজনী কোনখানে উদিয়াছে— বনমাঝে কি মনোমাঝে ।
যাব কি যাব না মিছে এ ভাবনা, মিছে মরি ভয়ে লাজে ।
কী জানি কোথা সে বিরহন্থতাশে ফিরে অভিসারসাজে—
বনমাঝে কি মনোমাঝে ॥
রাজমহিষী বিছানায় উঠে বসে, স্রস্ত তার বেণী, ত্রস্ত তার বক্ষ । বীণার গুঞ্জরণ আকাশে মেলে দেয় অন্তহীন অভিসারের পথ। রাগিণীবিছানো সেই শূন্তপথে বেরিয়ে পড়ে তার মন ।
কার দিকে। দেখার আগে যাকে চিনেছিল, দেখার পরে যাকে ভুলেছিল তারই দিকে ।
একদিন নিমফুলের গন্ধ অন্ধকার ঘরে নিয়ে এল অনির্বচনীয়ের আমন্ত্রণ। মহিষী দাঁড়াল বিছানা ছেড়ে বাতায়নের কাছে। নীচে সেই ছায়ামূতির নাচ, বিরহের সেই উর্মিদোলা ।
ও কি এল, ও কি এল না, বোঝা গেল না। ও কি মায়া কি স্বপনছায়া, ও কি ছলনা।
ধরা কি পড়ে ও রূপেরই ডোরে,
গানেরই তানে কি বাধিবে ওরে,
ও যে চিরবিরহেরই সাধনা।
ওর বঁাশিতে করুণ কী সুর লাগে
বিরহমিলনমিলিত রাগে । স্বখে কি দুখে ও পাওয়া না-পাওয়া,
হৃদয়বনে ও উদাসী হাওয়া,
বুঝি শুধু ও পরমকামনা ৷
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৯
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
