পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3) о о রবীন্দ্র-রচনাবলী মন্মথ । আমি রাগারগি করছি নে, আমার যা কর্তব্য তা আমাকে করতেই হবে। আমি সতীশকে বার বার বলেছি, দেনা করলে শোধবার ভার আমি নেব না । আমার সে কথার অন্যথা হবে না । বিধু। ওগো, এতবড়ো সত্যপ্রতিজ্ঞ যুধিষ্ঠির হলে সংসার চলে না। সতীশের এখন বয়স হয়েছে, তাকে জলপানি যা দাও তাতে ধার না করে তার চলে কী করে বলে দেখি । মন্মথ । যার যেরূপ সাধ্য তার চেয়ে চাল বড়ো করলে কারোই চলে না— ফকিরেরও না, বাদশারও না । বিধু। তবে কি ছেলেকে জেলে যেতে দেবে। মন্মথ । সে যদি যাবার আয়োজন করে এবং তোমরা যদি তার জোগাড় দাও তবে আমি ঠেকিয়ে রাখব কী করে । মন্মথর প্রস্থান । শশধরের প্রবেশ শশধর । আমাকে এ বাড়িতে দেখলে মন্মথ ভয় পায় । ভাবে, কালো কোর্তা ফরমাশ দেবার জন্য ফিতা হাতে তার ছেলের গায়ের মাপ নিতে এসেছি । তাই কদিন আসি নি। আজ তোমার চিঠি পেয়ে স্বকু কান্নাকাটি করে আমাকে বাড়িছাড়া করেছে । বিধু। দিদি আসেন নি ? শশধর । তিনি এখনি আসবেন । ব্যাপারটা কী । বিধু। সবই তো শুনেছ। এখন ছেলেটাকে জেলে না দিলে ওঁর মন স্বস্থির হচ্ছে না। র্যাঙ্কিন-হার্মানের পোশাক র্তার পছন্দ হল না, জেলখানার কাপড়টাই বোধ হর তার মতে বেশ সুসভ্য । শশধর । আর ষাই বল মন্মথকে বোঝাতে যেতে আমি পারব না। তার কথা আমি বুঝি নে, আমার কথাও সে বোঝে না, শেষকালে— বিধু। সে কি আমি জানি নে। তোমরা তো তার স্ত্রী নও যে মাথা হেঁট করে সমস্তই সহ্য করবে। কিন্তু এখন এ বিপদ ঠেকাই কী করে। শশধর । তোমার হাতে কিছু কি— বিধু। কিছুই নেই– সতীশের ধার শুধতে আমার প্রায় সমস্ত গহনাই বাধা পড়েছে, হাতে কেবল বালাজোড়া আছে।