পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ۵ ) (k কে আমাকে ছেলেবেলা হতে নবাবের মতো শৌখিন করে তুলেছে এবং আজ ভিক্ষুকের মতো পথে বের করলে। কে আমাকে পিতার শাসন হতে কেড়ে এনে বিশ্বের লাঞ্ছনার মধ্যে টেনে আনলে । কে আমাকে – সুকুমারী। ওগো, শুনছ ? তোমার সামনে আমাকে এমনি করে অপমান করে ? নিজের মুখে বললে কিনা খোকাকে গলা টিপে মারবে ? ওমা, কী হবে গো । আমি কালসাপকে নিজের হাতে দুধকল দিয়ে পুষেছি। সতীশ । দুধকলা আমারও ঘরে ছিল— সে দুধকলায় আমার রক্ত বিষ হয়ে উঠত ন – তা হতে চিরকালের মতো বঞ্চিত করে তুমি যে দুধকলা আমাকে খাইয়েছ, তাতে আমার বিষ জমে উঠেছে। সত্য কথাই বলছ, এখন আমাকে ভয় করাই চাই— এখন আমি দংশন করতে পারি। বিধুমুখীর প্রবেশ বিধু। কী সতীশ, কী হয়েছে, তোকে দেখে যে ভয় হয়। অমন করে তাকিয়ে আছিস কেন । আমাকে চিনতে পারছিস নে ? আমি যে তোর মা, সতীশ । সতীশ । মা, তোমাকে মা বলব কোন মুখে। মা হয়ে কেন তুমি আমার পিতার শাসন হতে আমাকে বঞ্চিত করলে। কেন তুমি আমাকে জেল হতে ফিরিয়ে আনলে। সে কি মাসির ঘর হতে ভয়ানক। তোমরা ঈশ্বরকে মা বলে ডাক, তিনি যদি তোমাদের মতো মা হন তবে তার আদর চাই নে, তিনি যেন আমাকে নরকে দেন । শশধর । আঃ সতীশ ! চলো চলো— কী বকছ, থামো ৷ এসো, বাইরে অামার ঘরে এসে । ষোড়শ পরিচ্ছেদ শশধর । সতীশ, একটু ঠাণ্ডী হও । তোমার প্রতি অত্যন্ত অন্তায় হয়েছে, সে কি আমি জানি নে । তোমার মাসি রাগের মুখে কী বলেছেন, সে কি অমন করে মনে নিতে আছে। দেখো, গোড়ায় যা ভুল হয়েছে তা এখন যতটা সম্ভব প্রতিকার করা যাবে, তুমি নিশ্চিন্ত থাকে। সতীশ । মেসোমশায়, প্রতিকারের আর কোনো সম্ভাবনা নেই। মাসিমার সঙ্গে আমার এখন যেরূপ সম্পর্ক দাড়িয়েছে তাতে তোমার ঘরের অন্ন আমার গলা দিয়ে আর গলবে না। এতদিন তোমাদের যা খরচ করিয়েছি তা যদি শেষ কড়িটি পর্যন্ত