পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ৩১৭ স্বকুমারী। তখন তো আমার হরেন জন্মায় নি। তা ছাড়া তুমি কি ভাব, তোমার আর ছেলেপুলে হবে না। শশধর । সুকু, ভেবে দেখো, আমাদের অন্যায় হচ্ছে । মনেই কর-না কেন, তোমার দুই ছেলে । স্বকুমারী। সে আমি অতশত বুঝি নে— তুমি যদি এমন কাজ কর তবে আমি গলায় দড়ি দিয়ে মরব— এই আমি বলে গেলুম। সুকুমারীর প্রস্থান। সতীশের প্রবেশ শশধর । কী সতীশ, থিয়েটারে গেলে না। সতীশ । না মেসোমশায়, আজ আর থিয়েটার না । এই দেখো, দীর্ঘকাল পরে মিস্টার ভাদুড়ির কাছ হতে আমি নিমন্ত্রণ পেয়েছি। তোমার দানপত্রের ফল দেখো । সংসারের উপর আমার ধিক্কার জন্মে গেছে, মেসোমশায় । আমি তোমার সে তালুক নেব না । শশধর । কেন, সতীশ । সতীশ । আমি ছদ্মবেশে পৃথিবীর কোনো সুখভোগ করব না। আমার যদি নিজের কোনো মূল্য থাকে তবে সেই মূল্য দিয়ে যতটুকু পাওয়া যায় ততটুকুই ভোগ করব, তার চেয়ে এক কানাকড়িও আমি বেশি চাই না, তা ছাড়া তুমি যে আমাকে তোমার সম্পত্তির অংশ দিতে চাও, মাসিমার সম্মতি নিয়েছ তো ? শশধর । না, সে তিনি— অর্থাৎ সে একরকম করে হবে । হঠাৎ তিনি রাজি না হতে পারেন, কিন্তু – সতীশ । তুমি তাকে বলেছ ? শশধর । হা, বলেছি বৈকি ! বিলক্ষণ । তাকে না বলেই কি আর— সতীশ । তিনি রাজি হয়েছেন ? শশধর । তাকে ঠিক রাজি বলা যায় না বটে, কিন্তু ভালো করে বুঝিয়ে— সতীশ । বৃথা চেষ্টা মেসোমশায়। র্তার নারাজিতে তোমার সম্পত্তি নিতে চাই নে। তুমি তাকে বোলো, আজ পর্যন্ত তিনি আমাকে যে অন্ন খাইয়েছেন ত৷ উদ্‌গার না করে আমি বঁচিব না। তার সমস্ত ঋণ স্বদস্তুদ্ধ শোধ করে তবে আমি হঁাপ ছাড়ব । শশধর । সে কিছুই দরকার নেই সতীশ– তোমাকে বরঞ্চ কিছু নগদ টাকা গোপনে— २२||२२