রবীন্দ্র-রচনাবলী
আলোকধামের আভাস সেথায় আছে মর্তের বুকে অমৃত পাত্রে ঢাকা ; ফাগুন সেথায় মন্ত্র লাগায় গাছে,
অরূপের রূপ পল্পবে পড়ে অঁাকা ।
তারি আহবানে সাড়া দেয় প্রাণ, জাগে বিস্মিত স্বর,
নিজ অর্থ না জানে ; * ধূলিময় বাধা-বন্ধ এড়ায়ে চলে যাই বহুদূর
আপনারি গানে গানে ।
‘দেখেছি দেখেছি’ এই কথা বলিবারে স্থর বেধে যায়, কথা না জোগায় মুখে ; ধন্য যে আমি, সে কথা জানাই কারে— পরশাতীতের হরষ জাগে যে বুকে ।
দুঃখ পেয়েছি, দৈন্ত ঘিরেছে, অশ্লীল দিনে রাতে
দেখেছি কুশ্রাতারে, মানুষের প্রাণে বিষ মিশায়েছে মানুষ আপন হাতে,
ঘটেছে তা বারে বারে।
তবু তো বধির করে নি শ্রবণ কভু, বেসুর ছাপায়ে কে দিয়েছে সুর আনি ; পরুষকলুষ ঝঞ্চায় শুনি তবু চিরদিবসের শাস্ত শিবের বাণী ।
যাহা জানিবার কোনোকালে তার জেনেছি যে কোনোকিছু
কে তাহ বলিতে পারে— সকল পাওয়ার মাঝে না-পাওয়ার চলিয়াছি পিছু পিছু
অচেনার অভিসারে ।
তবুও চিত্ত অহেতু আনন্দেতে বিশ্বনৃত্যলীলায় উঠেছে মেতে ; সেই ছন্দেই মুক্তি আমার পাব, মৃত্যুর পথে মৃত্যু এড়ায়ে যাব।
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
