পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ 8 o (t (t রাত্রি তখন অনেক। গভীর শোকের একান্ত ক্লাস্তিতে কেবল ক্ষণকালের জন্য রাসমণি অচেতন হইয়া ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলেন। কিন্তু ভবানীচরণের ঘুম হইতেছিল না। কিছুক্ষণ বিছানায় এ-পাশ ও-পাশ করিয়া অবশেষে দীর্ঘনিশ্বাস-সহকারে ‘দয়াময় হরি' বলিয়া উঠিয়া পড়িয়াছেন। কালীপদ যখন গ্রামের বিদ্যালয়েই পড়িত, যখন সে কলিকাতায় যায় নাই, তখন সে যে-একটি কোণের ঘরে বসিয়া পড়াশুনা করিত ভবানীচরণ কম্পিত হস্তে একটি প্রদীপ ধরিয়া সেই শূন্তম্বরে প্রবেশ করিলেন। রাসমণির হাতে চিত্র করা ছিন্ন কথাটি এখনো তক্তাপোশের উপর পাতা আছে, তাহার নানা স্থানে এখনো সেই কালির দাগ রহিয়াছে ; মলিন দেয়ালের গায়ে কয়লায় আঁকা সেই জ্যামিতির রেখাগুলি দেখা যাইতেছে ; তক্তাপোশের এক কোণে কতকগুলি হাতে-বাধা ময়লা কাগজের খাতার সঙ্গে তৃতীয় খণ্ড রয়াল রীডারের ছিন্নাবশেষ আজিও পড়িয়া আছে। আর— হায় হায়— তার ছেলেবয়সের ছোটো পায়ের একপাট চটি যে ঘরের কোণে পড়িয়া ছিল তাহা এতদিন কেহ দেখিয়াও দেখে নাই, আজ তাহা সকলের চেয়ে বড়ো হইয়া চোখে দেখা দিল— জগতে এমন কোনো মহৎ সামগ্ৰী নাই যাহা আজ ওই ছোটো জুতাটিকে আড়াল করিয়া রাখিতে পারে। কুলুঙ্গিতে প্রদীপটি রাখিয়া ভবানীচরণ সেই তক্তাপোশের উপর আসিয়া বসিলেন। র্তাহার শুষ্ক চোখে জল আসিল না, কিন্তু তাহার বুকের মধ্যে কেমন করিতে লাগিল— যথেষ্ট পরিমাণে নিশ্বাস লইতে র্তাহার পাজর ষেন ফাটিয়া যাইতে চাহিল। ঘরের পূর্বদিকের দরজা খুলিয়া দিয়া গরাদে ধরিয়া তিনি বাহিরের দিকে চাহিলেন। অন্ধকার রাত্রি, টিপ, টিপ করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে। সম্মুখে প্রাচীরবেষ্টিত ঘন জঙ্গল। তাহার মধ্যে ঠিক পড়িবার ঘরের সামনে একটুখানি জমিতে কালীপদ বাগান করিয়া তুলিবার চেষ্টা করিয়াছিল। এখনো তাহার স্বহস্তে রোপিত ঝুমকালত কফির বেড়ার উপর প্রচুর পল্লব বিস্তার করিয়া সজীব আছে– তাহ ফুলে ফুলে ভরিয়া গিয়াছে । আজ সেই বালকের যত্বলালিত বাগানের দিকে চাহিয় তাহার প্রাণ যেন কণ্ঠের কাছে উঠিয়া আসিল। আর কিছু আশা করিবার নাই ; গ্রীষ্মের সময় পূজার সময় करजप्छद्र हू श्छ, किरु षांशद्र छछ उँीशंद्र ब्रिज घब्र श्रृंछ श्ब्र श्रांप्छ cन श्रांब्र কোনোদিন কোনো ছুটিতেই ঘরে ফিরিয়া আসিবে না। “ওরে বাপ আমার !” বলিয়া ভবানীচরণ সেইখানেই মাটিতে বসিয়া পড়িলেন। কালীপদ তাহার বাপের