পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী "לף শুকনো পাতা কে যে ছড়ায় ওই দুরে’। বসন্তের ভূমিকায় ওই পাতাগুলি একদিন আগমনীর গানে তাল দিয়েছিল, আজ তারা যাবার পথের ধূলিকে ঢেকে দিল, পায়ে পায়ে প্রণাম করতে লাগল বিদায়পথের পথিককে। নবীনকে সন্ন্যাসীর বেশ পরিয়ে দিয়ে বললে, “তোমার উদয় সুন্দর, তোমার অস্তও সুন্দর।” ঝরা পাতা গো, আমি তোমারি দলে । অনেক হাসি অনেক অশ্রুজলে ফাগুন দিল বিদায়ুমন্ত্র আমার হিয়াতলে । ঝর পাতা গো, বসন্তী রঙ দিয়ে শেষের বেশে সেজেছ তুমি কি এ ! খেলিলে হোলি ধুলায় ঘাসে ঘাসে বসন্তের এই চরম ইতিহাসে । তোমারি মতো আমারো উত্তরী আগুন রঙে দিয়ো রঙিন করি, অস্তরবি লাগাক পরশমণি প্রাণের মম শেষের সম্বলে ॥ সে-যে কাছে এসে চলে গেল তবু জাগি নি। কী ঘুম তোরে পেয়েছিল হতভাগিনী ! মন ছিল সুপ্ত, কিন্তু দ্বার ছিল খোলা, সেইখান দিয়ে কার নিঃশব্দ চরণের আনাগোনা। জেগে উঠে দেখি ভূইচাপা ফুলের ছিন্ন পাপড়ি লুটিয়ে আছে তার যাওয়ার পথে । আর দেখি, ললাটে পরিয়ে দিয়ে গেছে বরণমালা, তার শেষ দান, কিন্তু এ-যে বিরহের মালা । কখন দিলে পরায়ে স্বপনে বরণমালা, ব্যথার মালা । প্রভাতে দেখি জেগে অরুণ মেঘে বিদায়বাশরি বাজে অশ্রু-গালা ।