পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ՖՀ রবীন্দ্র-রচনাবলী অবশেষে মহারাজ যখন বলিলেন, “হিরণ্যকশিপু আজ নয়, সে জাঙ্কস" তখন ধ্রুব তাহাতে আপত্তি করিবার কিছুই দেখিল না । এমন সময় নক্ষত্র রায় গৃহে প্রবেশ করিলেন—কছিলেন, “শুনিলাম রাজকার্বোপলক্ষ্যে মহারাজ আমাকে ডাকিয়াছেন । আদেশের জন্য প্রতীক্ষা করিতেছি ।” রাজা কহিলেন, আর একটু অপেক্ষা করো গল্পটা শেষ করিয়া লই ।” বলিয়া গল্পটা সমস্ত শেষ করিলেন। “আন্তস দুই –গল্প শুনিয়া সংক্ষেপে এব এইরূপ মত প্রকাশ করিল। গ্রুবের মাথায় মুকুট দেখিয়া নক্ষত্র রায়ের ভালো লাগে নাই। ধ্রুব যখন দেখিল নক্ষত্র রায়ের দৃষ্টি তাহার দিকে স্থাপিত রহিয়াছে, তখন সে নক্ষত্র রায়কে গভীরভাবে জানাইয়া দিল, “আমি আজ ।” নক্ষত্র বলিলেন, “ছি, ও কথা বলিতে নাই।” বলিয়া ধ্রুবের মাথা হইতে মুকুট তুলিয়া লইয়া রাজার হাতে দিতে উদ্যত হইলেন । ধ্রুব মুকুট-হরণের সম্ভাবনা দেখিয়া সত্যকার রাজাদের মতো চীংকার করিয়া উঠিল । গোবিন্দমাণিক্য তাঁহাকে এই আসন্ন বিপদ হইতে উদ্ধার করিলেন, নক্ষত্রকে নিবারণ করিলেন । অবশেষে গোবিন্দমাণিক্য নক্ষত্র রায়কে কহিলেন, “শুনিয়াছি রঘুপতি ঠাকুর অসৎ উপায়ে প্রজাদের অসন্তোষ উদ্রেক করিয়া দিতেছেন । তুমি স্বয়ং নগরের মধ্যে গিয়া এ বিষয়ে তদারক করিয়া আসিবে এবং সত্যমিথ্যা অবধারণ করিয়া আমাকে জানাইবে।” নক্ষত্র রায় কহিলেন, “ষে আঞ্জে” বলিয়া চলিয়া গেলেন কিন্তু গ্রুবের মাথায় মুকুট র্তাহার কিছুতেই ভালো লাগিল না। প্রহরী আসিয়া কহিল, “পুরোহিত ঠাকুরের সেবক জয়সিংহ সাক্ষাৎ প্রার্থনায় স্বারে দাড়াইয়া।” রাজা তাহাকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন । জয়সিংহ মহারাজকে প্রণাম করিয়া করজোড়ে কহিলেন, "মহারাজ, আমি বহুদূরদেশে চলিয়া যাইতেছি। আপনি আমার রাজা, জামার গুরু, আপনার আশীৰ্বাদ লইতে আসিয়াছি।” রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথায় যাইবে জয়সিংহ ।” জয়সিংহ কহিলেন, “জানি না মহারাজ, কোথায় তাহ কেহ বলিতে পারে না ।” রাজা কথা কহিতে উদ্যত দেখিয়া জয়সিংহ কহিলেন, “নিষেধ করিবেন না মহারাজ । আপনি নিষেধ করিলে আমার যাত্রা শুভ হইবে না ; আশীৰ্বাদ করুন, এখানে