পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৬ | সোমাচার্য। দেবদত্ত । সমবেত কণ্ঠে । ক্ষেমংকর } ধিক পাপ-রসনায় ! শত ভাগে ফাটিয়া গেল না বেদনায়চাহিল তোমার নির্বাসন ! চলো সবে বিপ্ৰগণ, জননীরে জয়জয়রাবে রেখে আসি রাজগৃহে।। জয় জননীর ! জয় মা লক্ষ্মীর ! জয় করুণাময়ীর ! [মালিনীকে ঘিরিয়া লইয়া সুপ্রিয় ও ক্ষেমংকর ব্যতীত সকলের প্রস্তান দূর হােক, মোহ দূর হােক! কোথা যাও হে সুপ্রিয় ? ছেড়ে দাও, মোরে ছেড়ে দাও । স্থির হও । তুমিও কি, বন্ধু, অন্ধভাবে জনস্রোতে সর্বসাথে ভেসে চলে যাবে ? এ কি স্বপ্ন, ক্ষেমংকর ? স্বপ্নে মগ্ন ছিলে এতক্ষণ— এখন সবলে চক্ষু মেলে জেগে চেয়ে দেখো । মিথ্যা তব স্বাগধাম, মিথ্যা দেবদেবী, ক্ষেমংকর- ভ্ৰমিলাম বৃথা। এ সংসারে এতকাল। পাই নাই কোনো তৃপ্তি কোনো শাস্ত্ৰে, অন্তর সদাই কেঁদোছে সংশয়ে। আজ আমি লভিয়াছি ধর্ম মোর, হৃদয়ের বড়ো কাছাকাছি। সবার দেবতা তব, শাস্ত্রের দেবতাআমার দেবতা নহে। প্ৰাণ তার কোথা, আমার অন্তরমাঝে কই কহে কথা, কী প্রশ্নের দেয়। সে উত্তর- কী ব্যথার দেয় সে সাস্তুনা ! আজি তুমি কে আমার জীবনতরণী-’পরে রাখিলে চরণসমস্ত জড়তা তার করিয়া হরণ একি গতি দিলে তারে ! এতদিন পরে এ মর্তধরণীমাঝে মানবের ঘরে পেয়েছি দেবতা মোর। হায় হয়। সখে, আপন হৃদয় যাবে ভুলায় কুহিকে আপনারে, বড়ো ভয়ংকর সে সময়শাস্ত্ৰ হয়। ইচ্ছা আপনার, ধর্ম হয়। আপন কল্পনা । এই জ্যোৎস্নাময়ী নিশি যে সৌন্দর্যে দিকে দিকে রহিয়াছে মিশি।