পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(? abr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী মা জল্প সাহসিনি শারদচন্দ্ৰকান্তদন্তাংশ।বাস্তব তমাংসি সমাপিয়ন্তি । অঞ্চলে বাধিয়া রাখো কঙ্কণ মুখর। কথাটি কোয়ো না, তব দন্ত-অংশুরুচি পথের তিমিররাশি পাছে ফেলে মুছি। শ্ৰীশ। রসিকবাবু, আপনার বুলি যে একেবারে ভরা। এমন কত তৰ্জমা করে রেখেছেন % রসিক। বিস্তর— লক্ষ্মী তো এলেন না, কেবল বাণীকে নিয়েই দিন যাপন করছি। শ্ৰীশ । ওহে বিপিন, অভিসার ব্যাপারটা কল্পনা করতে বেশ লাগে । বিপিন। ওটা পুনর্বার চালাবার জন্যে চিরকুমার-সভায় একটা প্ৰস্তাব এনে দেখো-না | শ্ৰীশ। কতকগুলো জিনিস আছে যার আইডিয়াটা এত সুন্দর যে, সংসারে সেটা চালাতে সাহস হয় না। যে রাস্তায় অভিসার হতে পারে, যেখানে কামিনীদের হার থেকে মুক্তো ছিড়ে ছড়িয়ে পড়ে, সে রাস্তা কি তোমার পটোলডাঙা স্ট্রীট ! সে রাস্তা জগতে কোথাও নেই। বিরাহিণীর হৃদয় নীলাম্বর পরে মনোরাজ্যের পথে ঐরকম করে বেরিয়ে থাকে- বক্ষের উপর থেকে মুক্তো ছিড়ে পড়ে, চেয়েও দেখে না— সত্যিকার মুক্তো হলে কুড়িয়ে নিত। কী বলেন রসিকবাবু ? রসিক । সে কথা মানতেই হয়— অভিসারটা মনে মনেই ভালো, গাড়ি-ঘোড়ার রাস্তায় অত্যন্ত বেমানান। আশীৰ্ব্বাদ করি শ্ৰীশবাবু, এইরকম বসন্তের জ্যোৎস্নারাত্রে কোনো-একটি জানলা থেকে কোনো—এক রমণীর ব্যাকলে হৃদয় তোমার বাসার দিকে যেন অভিসারে যাত্ৰা করে। শ্ৰীশ। তা করবে রসিকবাবু, আপনার আশীর্বাদ ফলবে। আজকের হাওয়াতে সেই খবরটা আমি মনে মনে পাচ্ছি। বিশে ডাকাত যেমন খবর দিয়ে ডাকাতি করত, আমার অজানা অভিসারিকা তেমনি পর্বে হতেই আমাকে অভিসারের খবর পাঠিয়েছে। বিপিন । তোমার সেই ছাতের বারান্দাটা সাজিয়ে প্ৰস্তুত হয়ে থেকে । শ্ৰীশ । তা আমার সেই দক্ষিণের বারান্দায় একটি চৌকিতে আমি বসি, আর-একটি চৌকি সাজানো থাকে । বিপিন । সেটাতে আমি এসে বসি । শ্ৰীশ । মধ্যবভাবে গুড়ং দদ্যাৎ অভাবপক্ষে তোমাকে নিয়ে চলে । বিপিন । মধুময়ী যখন আসবেন তখন হতভাগার ভাগো লগুড়ং দদ্যাৎ । রসিক । ( জনাস্তিকে ) শ্ৰীশবাবু, আপনার সেই দক্ষিণের ছাতটিকে চিহ্নিত করে রাখবার জনে। যে পতাকা ওড়ানো আবশ্যক সেটা যে ফেলে এলেন ! শ্ৰীশ | রুমালটা কি এখন চেষ্টা করলে পাওয়া যেতে পারবে ? রাসিক । চেষ্টা করতে দোষ কী ? শ্ৰীশ। বিপিন, তুমি ভাই রসিকবাবুর সঙ্গে একটু কথাবার্তা কও, আমি চট করে আসছি। [প্ৰস্থান বিপিন। আচ্ছা রসিকবাবু, রাগ করবেন না। রসিক । যদি বা করি, আপনার ভয় করবার কোনো কারণ নেই— আমি ভারি দুর্বল । বিপিন। দুই-একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করব, আপনি বিরক্ত হবেন না। রাসিক । আমার বয়স সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন নয় তো ? বিপিন । না । রসিক। তবে জিজ্ঞাসা করুন, ঠিক উত্তর পাবেন। বিপিন। সেদিন যে মহিলাটিকে দেখলাম, তিনি—