পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ولا 8 রামপুর বোয়ালিয়া Sq (5 a SSS is রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী শিশুহীন শয়ন-শিয়ারে । সেই আদি জননীর জনশূন্য জীবশ্মান্য স্নেহচঞ্চলতা সুগভীর, আসন্ন প্ৰতীক্ষাপূর্ণ সেই তব জাগ্ৰত বাসনা, অগাধ প্ৰাণের তলে সেই তব অজানা বেদনা অনাগত মহাভবিষ্যৎ-লাগি হািদয়ে আমার যুগান্তরস্মৃতিসম উদিত হতেছে বারম্বার। তেমনি অচেনা প্ৰত্যাশায়, অলক্ষ্য সুদূর—তরে উঠিছে মর্মর স্বর। মানবহৃদয়-সিন্ধুতলে। যেন নব মহাদেশ সৃজন হতেছে। পলে পলে, আপনি সে নাহি জানে। শুধু অর্ধ-অনুভব তারি ব্যাকুল করেছে তারে, মনে তার দিয়েছে সঞ্চারি আকারপ্রকারহীন তৃপ্তিহীন এক মহা আশা— প্ৰমাণের অগোচর, প্ৰত্যক্ষের বাহিরেতে বাসা । তর্ক তারে পরিহাসে, মর্ম তারে সত্য বলি জানে, সহস্ৰ ব্যাঘাত মাঝে তবুও সে সন্দেহ না মানে, জননী যেমন জানে জঠরের গোপন শিশুরে, প্ৰাণে যবে স্নেহ জাগে, স্তনে যবে দুগ্ধ উঠে পুরে । চেয়ে আছি তোমা পানে ; তুমি সিন্ধু, প্ৰকাণ্ড হাসিয়ে টানিয়া নিতেছ। যেন মহাবেগে কী নাভীর টানে আমার এ মামখানি তোমার তরঙ্গ-মাঝখানে কোলের শিশুর মতো । হে জলধি, বুঝিবে কি তুমি আমার মানবভাষা । জােন কি তোমার ধারাভূমি পীড়ায় পীডিত আজি ফিরিতেছে। এ-পাশ ও-পাশ, চক্ষে বহে আশ্রমধারা, ঘন ঘন বহে উষ্ণ শ্বাস । নাহি জানে কী যে চায়, নাহি জানে কিসে ঘুচে তৃষা, আপনার মনোমাঝে আপনি সে হারায়েছে দিশা বিকারের মরীচিকা—জালে । অতল গভীর তব অন্তর হইতে কহ সান্ত্ৰিনার বাক্য অভিনব আষাঢ়ের জলদমন্দ্রের মতো ; স্নিগ্ধ মাতৃপাণি চিস্তাতপ্ত ভালে তার তালে তালে বার স্বার হানি, সর্বাঙ্গে সহস্ৰাবার দিয়া তারে স্নেহময় চুমা, বলো তারে “শান্তি, শান্তি’, বলে তারে ‘ঘুমা, ঘুমা, ঘুমা” ।