পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনার তরী প্ৰতীক্ষা ওরে মৃত্যু, জানি তুই আমার বক্ষের মাঝে বেঁধেছিস বাসা । যেখানে নির্জন কুঞ্জে ফুটে আছে যত মোর স্নেহ-ভালোবাসা, গোপন মনের আশা, জীবনের দুঃখ-সুখ, মর্মের বেদনা, চির-দিবসের যত হাসি-অশ্র-চিহ্ন-আঁকা বাসনা-সাধনা ; যেখানে নন্দন-ছায়ে নিঃশঙ্কে করিছে খেলা অস্তরের ধন, স্নেহের পুত্তলিগুলি, আজন্মের স্নেহস্মৃতি, আনন্দ-কিরণ কত আলো, কত ছায়া, কত ক্ষুদ্র বিহঙ্গের গীতিময়ী ভাষাওরে মৃতু্য, জানিয়াছি, তারি মাঝখানে এসে বেঁধেছিস বাসা ! নিশিদিন নিরস্তর জগৎ জুডিয়া খেলা, জীবন চঞ্চল । চেয়ে দেখি রাজপথে চলেছে অশ্রান্তগতি যত পান্ত দল ; প্রাণপূর্ণ বেগে, পুষ্প উঠে। জেগে ; চারি দিকে কতশত দেখাশোনা আনাগোনা প্ৰভাতে সন্ধ্যায় ; নূতন অধ্যায় ; তুমি শুধু এক প্ৰান্তে বসে আছ অহৰ্নিশি৷ স্তব্ধ নেত্ৰ খুলি— মাঝে মাঝে রাত্ৰিবেলা। উঠ পক্ষ ঝাপটিয়া, বক্ষ উঠে দুলি । যে সুদূর সমুদ্রের পরিপার-রাজ্য হতে আসিয়াছ হেথা, এনেছ কি সেথাকার নূতন সংবাদ কিছু গোপন বারতা । 8 Գ