পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩ e রবীন্দ্র-রচনাবলী 이 অন্তঃপুরের প্রাঙ্গণ বিভা, উদয়াদিত্য, রামচন্দ্ররায় ও সুরমা । বসন্তরায়ের প্রবেশ বসন্তরায়কে দেখিয়া মুখে কাপড় ঢাকিয়া বিভা কাদিয়া উঠিল বসন্তরায় । ( উদয়াদিত্যের হাত ধরিয়া ) দাদা, একটা উপায় করে । উদয়াদিত্য । অন্তঃপুরের প্রহরীদের জন্যে আমি ভাবি নে। সদর-দরজায় এই প্রহরে যে দুজন পাহারা দেয় তারাও আমার বশ আছে। কিন্তু দেখলুম বড়ো ফটক বন্ধ, সে তে পার হবার উপায় নেই। বসন্তরায় । উপায় নেই বললে চলবে কেন ? উপায় যে করতেই হবে। দাদ। চলে । উদয়াদিত্য । যদি-বা ফটক পার হওয়া যায়, এ রাজ্য থেকে পালাবে কী করে ? রামচন্দ্র। আমার চৌষট্টি দাড়ের ছিপ রয়েছে, একবার তাতে চড়ে বসতে পারলে আমি আর কাউকে ভয় করি নে। বসন্তরায়। সে নৌকো কোথায় আছে ভাই ? উদয়াদিত্য। সে নৌকে। আমি রাজবাটীর দক্ষিণ পাশের খালের মধ্যে আনিয়ে রেখেছি। কিন্তু সে পর্যন্ত পৌছব কী করে ? রামচন্দ্র। রামমোহন কোথায় গেল ? উদয়াদিত্য। সে বন্ধ ফটকের উপর খাচার সিংহের মতো বৃথা ধাক্কা মারছে— তাতে কোনো ফল হবে না । বিভা। খাল তো দূরে নয়। তোমার দক্ষিণের ঘরের জানালার একেবারে উদয়াদিত্য। সে যে অনেক নীচে । লাফিয়ে পড়া চলে না তো । সুরমা । ( উদয়াদিত্যকে মৃদুস্বরে ) আমাদের এখানে যে দাড়িয়ে থাকলে কোনো ফল হবে তা তো বোধ হয় না। মহারাজ কি শুতে গিয়েছেন ? বসন্তরায় । ই শুতে গিয়েছেন, রাত তো কম হয় নি । সুরমা । মা কি একবার তার কাছে গিয়ে— উদয়াদিত্য। মা এ-সমস্ত কিছুই জানেন না। জানলে তিনি কান্নাকাটি করে এমনি গোলমাল বাধিয়ে তুলবেন যে, আর কোনো উপায় থাকবে না। জানই