পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७२ रे রবীন্দ্র-রচনাবলী এখানে লুকিয়ে বসে ! আমি ওকে সাতরাজ্যি খুজে বেড়াচ্ছি। এদিকে সন্ধ্যাবেলায় ঘরের বাইরে দু পা চলতে গা ছমছম করে, জ্যাঠাইমার কাছে আসবার সময় ভয়ডর থাকে না। চল শুতে চল ।” হাবলু কুমুকে অঁাকড়ে ধরে রইল। কুমু বললে, “আহা, থাক-না আর-একটু।” “এমন করে সাহস বেড়ে গেলে শেষকালে বিপদে পড়বে। ওকে শুইয়ে আমি এখনই আসছি।” কুমুর বড়ো ইচ্ছে হল হাবলুকে কিছু দেয়, খাবার কিম্বা খেলার জিনিস । কিন্তু দেবার মতো কিছু নেই, তাই ওকে চুমে খেয়ে বললে, “আজ শুতে যাও, লক্ষ্মী ছেলে, কাল দুপুরবেলা তোমাকে বাজনা শোনাব ।” হাবলু করুণ মুখে উঠে মায়ের সঙ্গে চলে গেল । কিছুক্ষণ পরেই মোতির মা ফিরে এল। নবীনের ষড়যন্ত্রের কী ফল হল তাই, জানবার জন্যে মন অস্থির হয়ে আছে। কুমুর কাছে বসেই চোখে পড়ল, তার হাতে সেই নীলার আংটি। বুঝলে যে কাজ হয়েছে। কথাটা উত্থাপন করবার উপলক্ষ স্বরূপ বললে, “দিদি, তোমার এই বাজনাটা পেলে কেমন করে ?” কুমু বললে, “দাদা পাঠিয়ে দিয়েছেন।” “বড়োঠাকুর তোমাকে এনে দিলেন বুঝি ?” কুমু সংক্ষেপে বললে, “ই।” মোতির মা কুমুর মুখের দিকে তাকিয়ে উল্লাস বা বিস্ময়ের চিহ্ন খুজে পেলে न! । “তোমার দাদার কথা কিছু বললেন কি ?” “मी ।” تلعب “পরশু তিনি তো আসবেন, তার কাছে তোমার যাবার কথা উঠল না ?” “না, দাদার কোনো কথা হয় নি।” “তুমি নিজেই চাইলে না কেন, দিদি ?” “আমি ওঁর কাছে আর যা-কিছু চাই নে কেন, এটা পারব না।” “তোমার চাবার দরকার হবে না, তুমি অমনিই ওঁর কাছে চলে যেয়ে। বড়োঠাকুর কিছুই বলবেন না।” মোতির মা এখনও একটা কথা সম্পূর্ণ বুঝতে পারে নি যে মধুসূদনের অমুকুলত৷ কুমুর পক্ষে সংকট হয়ে উঠেছে ; এর বদলে মধুসূদন যা চায় তা ইচ্ছে করলেও কুমু