পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ぬbr রবীন্দ্র-রচনাবলী দৃষ্টান্ত দেখিলে ক্ষণকালের জন্য দ্বিধা উপস্থিত হয়, মনে সন্দেহ জাগে যে, পাপ-পুণ্যের ভালো-মন্দের এইরূপ উত্তঙ্গ তরঙ্গিত অসাম্য শ্রেয়, না অপাপের অমন্দের একটি নিজীব মুবুহৎ সমতল নিশ্চলত শ্রেয় ! শেষের দিকেই আমাদের অন্তরের আকর্ষণ— কারণ, বিরাট সংগ্রামের উপযোগী বল আমরা অন্তঃকরণের মধ্যে অনুভব করি না, ধর্ম এবং অর্থ, কাম এবং মোক্ষ এই সব-কটাকে একত্র চালনা করিবার মতে উদ্যম আমাদের নাই— আমরা সর্বপ্রকার দুরন্ত চেষ্টাকে নিবৃত্ত করিয়া সম্পূর্ণ শান্তিলাভ করিবার প্রয়াসী। কিন্তু শাস্ত্রে যখন ভারতবর্ষকে দুর্গপ্রাচীরের মতে রক্ষা করিতে পারে না, পরজাতির সংঘাত যখন আনিবার্ষ, যখন লোভের নিকট হইতে স্বার্থরক্ষা এবং হিংসার নিকট হইতে আত্মরক্ষা করিতে আমরা বাধ্য, তখন মানবের মধ্যে যে-দানবট আছে, সেটাকে সকালে সন্ধ্যায় অমিষ খাওয়াইয়া কিছু না হউক দ্বারের বাহিরেও প্রহরীর মতে বসাইয়া রাখা সংগত। তাহাতে কিছু না হউক, বলশালী লোকের শ্রদ্ধা অাকর্ষণ করে । কিন্তু হায়, ভারতবর্ষে দেব-দানবের যুদ্ধে দানবগুলো একেবারেই গেছে— দেবতারাও যে খুব সজীব আছেন, তাহ বোধ হয় না। অন্তত সর্বপ্রকার শঙ্কা ও দ্বন্দ্ব -শূন্য হইয়া ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন। শ্রাবণ ১৩০৫