QSWり রবীন্দ্র-রচনাবলী পরিচিত ব্যক্তিকে অন্যের নিকট পরিচিত করা কার্যটি তেমন সহজ নহে । জীবনের ঘটনার মুখা-গৌণ নির্বাচন করা বড়ো কঠিন । যিনি আমাদের নিকট স্থপরিচিত র্তাহার কোন অংশ অন্যের নিকট পরিচয়সাধনের পক্ষে সর্বাপেক্ষ উপযোগী তাহা বাহির করা দুরূহ। অনেক কথা অনেক ঘটনাকে সহসা সামান্য মনে হইতে পারে, পরিচয়ের পক্ষে যাহা সামান্য নহে। কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্রের অনেক ক্ষমতাশালী বন্ধু আছেন যাহাদের সমালোচনশক্তি নির্বাচনশক্তি গঠনশক্তি সামান্য নহে। সাহিত্যক্ষেত্রে বঙ্কিমের প্রতিমূর্তি স্থাপনের ভার তাহদের লওয়া কর্তব্য। স্বভাবত কৃতঘ্ন বলিয়াই যে আমাদের পাব্লিক অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাহা নহে, সে ভালো করিয়া বোঝে না, সম্পূর্ণরূপে জানে না বলিয়াই তাহার কৃতজ্ঞতা জাগ্রত হইয় উঠে না। মৃত ব্যক্তির কার্যগুলি ভালো করিয়া দেখাইয়া দিতে হইবে এবং তাহাকে আমাদের মধ্যে জ্ঞানিয়া উপস্থিত করিতে হইবে। লেখক বলিয়া নহে, কিন্তু স্নেহপ্রতিমুখদুঃখে মনুষ্যভাবে তাহার লেখার সহিত এবং আমাদের সহস্ত্রের সহিত তাহাকে সংযুক্ত করিয়া দিতে হইবে। র্তাহাকে কেবল দেবতা বলিয়া পূজা করা" নহে, কিন্তু স্বজাতীয় বলিয়া আমাদের আত্মীয় করিয়া দিতে হইবে। আমরা আমাদের মহৎ ব্যক্তিদিগকে দেবলোকে নির্বাসিত করিয়া দিই। তাহতে আমাদের মনুষ্যলোক দরিদ্র এবং গৌরবহীন হইয়া যায়। কিন্তু তাহার। যদি রক্তমাংসের মনুষ্যরূপে সুনির্দিষ্ট-পরিচিত হন, সহস্ৰ ভালোমন্দের মধ্যেও আমরা যদি তাহাদিগকে মহং বলিয়া জানিতে পারি তবেই তাহদের মহুযুত্বের অন্তর্নিহিত সেই মহত্বটুকু আমরা যথার্থ অন্তরের সহিত গ্রহণ করিতে পারি, তাহাকে ভালোবাসি এব। বিস্মৃত হই না । এ কাজ কেবল বন্ধুরাই করিতে পারেন। এবং বন্ধুগণ যখন প্রস্তরমূর্তিস্থাপনে উদাসীন পাব্লিককে অকৃতজ্ঞ বলিয়া তিরস্কার করিতেছেন তখন পাব্লিকও তাহদের প্রতি অকৃতজ্ঞতার অভিযোগ আনিতে পারেন। কারণ, তাহারা বঙ্কিমের নিকট হইতে কেবলমাত্র উপকার পান নাই, বন্ধুত্ব পাইয়াছেন, তাহারা কেবল রচনা প্লান নাই, রচয়িতাকে পাইয়াছেন। অর্থ থাকিলে প্রস্তরমূর্তি স্থাপন করা সহজ, কিন্তু বঙ্কিমকে বন্ধুভাবে মনুষ্যভাবে মহন্তলোকে প্রতিষ্ঠিত করা কেবল র্তাহীদেরই প্রতি এবং চেষ্টা -সাধ্য। র্তাহাদের বন্ধুকে কেবল র্তাহাদের নিজের স্মরণের মধ্যে আবদ্ধ করিয়া রাখিলে যথার্থ বন্ধুঋণ শোধ করা হইবে না। د ۰هاد Tšچخ
