পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংযোজন शभ হে যক্ষ তোমার প্রেম ছিল বদ্ধ কোরকের মতে, একান্তে প্ৰেয়সী তব সঙ্গে যাবে ছিল অনিয়ত সংকীর্ণ ঘরের কোণে, আপন বেষ্টনে তুমি যবে রুদ্ধ রেখেছিলে তারে দু-জনের নির্জন উৎসবে সংসারের নিভৃত সীমায়, শ্রাবণের মেঘজল কৃপণের মতো যথা শশাঙ্কের রচে অন্তরাল আপনার আলিঙ্গনে আপনি হারায়ে ফেলে তারে, সম্পূর্ণ মহিমা তার দেখিতে পায় না। একেবারে অন্ধ মোহাবেশে । বর তুমি পেলে যবে প্ৰভুশাপে, সামীপের বন্ধ ছিন্ন হল, বিরহের দুঃখতাপে প্রেম হল পূর্ণ বিকশিত ; জানিল সে আপনারে বিশ্বধরিত্রীর মাঝে | নির্বাধে তাহার চারি ধারে সান্ধ্য অর্ঘকরে দান বৃষ্টিজলে সিক্ত বনযুথী গন্ধের অঞ্জলি ; নীপনিকুঞ্জের জানাল আকৃতি রেণুভারে মন্থর পবন । উঠে গেল যবনিকা আত্মবিস্মৃতির, দেখা দিল দিকে দিগন্তরে লিখা উদার বর্ষার বাণী, যাত্রামন্ত্র বিশ্বপথিকের মেঘধ্বজে আঁকা, দিশ্বধু প্রাঙ্গণ হতে নিভীকের শূন্যপথে অভিসার। আষাঢ়ের প্রথমদিবসে দীক্ষা পেলে অশ্রুদ্ধেতি সৌম্য বিষাদের ; নিত্যরসে আপনি করিলে সৃষ্টি রূপসীর অপূর্ব মূৱতি অন্তহীন গরিমায় কান্তিময়ী। এক দিন ছিল সেই সতী গৃহের সঙ্গিনী, তারে বসাইলে ছন্দশস্থ রবে অনন্তের আনন্দ-মন্দিরে । প্রেম তব ছিল বাক্যহীন, আজ সে পেয়েছে তার ভাষা, আজ তার রাত্রিদিন সংগীততরঙ্গে আন্দােলিত। তুমি আজ হলে কবি, মুক্ত তব দৃষ্টিপথে উদবারিত নিখিলের ছবি । দাৰ্জিলিং 28 Jé »७8० শ্যামমেঘে স্নিগ্ধচ্ছায়া । বক্ষ ছাড়ি মর্মে অধ্যাসীনা প্রিয়া তব ধ্যানোস্তুবা লয়ে তার বিরহের বীণা ৷ অপরূপ রূপে রচিবিচ্ছেদের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে তোমার প্রেমের সৃষ্টি উৎসর্গ করিলে বিশ্বজনে। আটত্রিশ-সংখ্যক কবিতা তুলনীয়। SRR