পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ বর্ষণ ס) לא ওলো শেফালি, সবুজ ছায়ার প্রদোষে তুই জ্বলিস দীপালি। তারার বাণী আকাশ থেকে তোমার রূপে দিল ঐকে শ্যামল পাতায় থরে থরে আখর রুপালি । বুকের খসা গন্ধ-আঁচল রইল পাতা সে কাননবীথির গোপন কোণের বিবশ বাতাসে । সারাটা দিন বাটে বাটে নানা কাজে দিবস কাটে, আমার সাঝে বাজে তোমার করুণ ভূপালি। রাজা । নটরাজ, অমন শুকতারাতে শেফালিতে ভাগ করে করে শরৎকে দেখাবে কেমন করে ? নটরাজ। আর দেরি নেই, কবি ফাদ পেতেছে। যে মাধুরী হাওয়ায় হাওয়ায় আভাসে ভেসে বেড়ায় সেই ছায়ারূপটিকে ধরেছে কবি আপন গানে। সেই ছায়ারূপিণীর নূপুর বাজল, কঙ্কণ চমক দিল কবির সুরে, সেই সুরটিকে তোমাদের কণ্ঠে জাগাঁও তো। যে ছায়ারে ধরব বলে করেছিলেম। পণ আজ সে মেনে নিল আমার গানেরই বন্ধন । আকাশে যার পরশ মিলায় শরৎ মেঘের ক্ষণিক লীলায় । আপন সুরে আজ শুনি তার নূপুরগুঞ্জন। অলস দিনের হাওয়ায় গন্ধখানি মেলে যেত গোপন আসাযাওয়ায় । আজ শরতের ছায়ানটে মোর রাগিণীর মিলন ঘটে সেই মিলনের তালে তালে বাজায় সে কঙ্কণ। নটরাজ। শুভ্ৰ শান্তির মূর্তি ধরে এইবার আসুন শরৎশ্ৰী।। সজল হাওয়ার দোল থেমে যাবে- আকাশে আলােক-শতদলের উপর তিনি চরণ রাখুন, দিকে দিগন্তে সে বিকশিত হয়ে উঠুক। এসো শরতের অমল মহিমা, এসো হে ধীরে । চিত্ত বিকশিবে চরণ ঘিরে বিরহ-তরঙ্গে অকুলে সে যে দোলে দিবা৷যামিনী আকুল সমীরে। বাদল লক্ষ্মীর প্রবেশ রাজা। ও কী হল নটরাজ, সেই বাদল লক্ষ্মীই তো ফিরে এলেন ; মাথায় সেই অবগুণ্ঠন। রাজার মানই তো রইল, কবি তো শরৎকে আনতে পারলেন না। নটরাজ। চিনতে সময় লাগে মহারাজ। ভোেররাত্রিকেও নিশীথরাত্রি বলে ভুল হয়। কিন্তু ভোরের পাখির কাছে কিছুই লুকোনো থাকে না ; অন্ধকারের মধ্যেই সে আলোর গান গেয়ে ওঠে। বাদলের ছলনার ভিতর থেকেই কবি শরৎকে চিনেছে, তাই আমন্ত্রণের গান ধরল। ]