পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ বর্ষণ NG বিজড়িত আলোছায়ে বিরহমিলনে গাথা নব প্রণয়ন্দোলায় দোলো । [অবগুণ্ঠন মোচন নটরাজ। অবগুণ্ঠন তো খুলল। কিন্তু এ কী দেখলুম। এ কি রূপ, না বাণী ? এ কি আমার মনেরই মধ্যে, না। আমায় চোখেরই সামনে ? তোমার নাম জানি নে সুর জানি। তুমি শরৎপ্রাতের আলোর বাণী। সারাবেল শিউলিবনে আছি মগন আপন মনে, কিসের ভুলে রেখে গেলে আমার বুকে ব্যথার বঁশিখনি! আমি যা বলিতে চাই হল বলা, ওই শিশিরে শিশিরে অশ্রুগলা । আমি যা দেখিতে চাই প্ৰাণের মাঝে সেই মুরতি এই বিরাজে, ছায়াতে আলোতে আঁচল গাথা আমার অকারণ বেদনার বীণাপাণি । রাজা । শরৎশ্ৰী কাকে ইশারা করে ডাকছে ? বলে তো এবার কে আসবে ? নটরাজ। উনি ডাকছেন সুন্দরকে। যা ছিল ছায়ার কুঁড়ি তা ফুটল আলোর ফুলে। গানের ভিতর তাকিয়ে দেখুন। সুন্দরের প্রবেশ । কারাবাশি নিশিভোরে বাজিল মোর প্রাণে ? ফুটে দিগন্তে অরুণ-কিরণ-কলিকা। শরতের আলোতে সুন্দর আসে, ধরণীর আঁখি যে শিশিরোভাসে । হৃদয়কুঞ্জবনে মঞ্জরিল মধুর শেফালিকা। রাজা । নটরাজ, শরৎলক্ষ্মীর সহচরটি এরই মধ্যে চঞ্চল হয়ে উঠলেন কেন ? নটরাজ। শিশির শুকিয়ে যায়, শিউলি ঝড়ে পড়ে, আশ্বিনের সাদা মেঘ আলোয় যায় মিলিয়ে। ক্ষণিকের অতিথি স্বৰ্গ থেকে মর্তে আসেন। কঁদিয়ে দিয়ে চলে যান। এই যাওয়া আসায় স্বৰ্গমর্তের মিলনপথ বিরহের ভিতর দিয়ে খুলে যায়। হে ক্ষণিকের অতিথি, এলে প্ৰভাতে কারে চাহিয়া, ঝরা শেফালির পথবিহিয়া ।