পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

邻国邻磁 VO) S) হইয়াছিল; আর, আজ কতদিন পরে সেই আলোকময় লোকময় পৃথিবী ছাড়িয়া এই ভয়ংকর জনশূন্য প্ৰলয়ন্ধকারের মধ্যে সুরবালা একাকিনী আমারই পার্থে আসিয়া উপনীত হইয়াছে। জন্মস্রোতে সেই নবকলিকাকে আমার কাছে আনিয়া ফেলিয়াছিল, মৃত্যুম্রোতে সেই বিকশিত পুষ্পটিকে আমারই কাছে আনিয়া ফেলিয়ছে- এখন কেবল আর-একটা ঢেউ আসিলেই পৃথিবীর এই প্রান্তটুকু হইতে বিচ্ছেদের এই বৃন্তটুকু হইতে খসিয়া আমরা দুজনে এক হইয়া যাই। সে ঢেউ না আসুক। স্বামীপুত্ৰগৃহধনজন লইয়া সুরবালা চিরদিন সুখে থাকুক। আমি এই এক রাত্রে মহাপ্রলয়ের তীরে দাড়াইয়া অনন্ত আনন্দের আস্বাদ পাইয়াছি। রাত্রি প্রায় শেষ হইয়া আসিল-ঝড় থামিয়া গেল, জল নামিয়াগেল-সুরবালা কোনো কথা না বলিয়া বাড়ি চলিয়া গেল, আমিও কোনো কথা না বলিয়া আমার ঘরে গেলাম। ভাবিলাম, আমি নাজিরও হই নাই, সেরেস্তাদারও হই নাই, গারিবালডিও হই নাই, আমি এক ভাঙা স্কুলের সেকেন্ড মাস্টার, আমার সমস্ত ইহজীবনে কেবল ক্ষণকালের জন্য একটি অনন্তরাত্রির উদয় হইয়াছিল। আমার পরমাত্র সন্তু লিলি হন্তে ষ্টে কািমত্র রাত্রিই আমার তুচ্ছ জীবনের একমাত্র চরম সার্থকতা | জ্যৈষ্ঠ ১২৯৯ 6ीकों उगाया( १ीघ्र S দূর সমুদ্রের মধ্যে একটা দ্বীপ। সেখানে কেবল তাসের সাহেব, তাসের বিবি, টেক্কা এবং গােলামের বাস। দুরি তিরি হইতে নহলা-দহলা পর্যন্ত আরো অনেক-ঘর গৃহস্থ আছে কিন্তু তাহারা উচ্চজাতীয় নহে। টেক্কা সাহেব গােলাম এই তিনটেই প্রধান বর্ণ নহলা-দহলারা অন্ত্যজ- তাহাদের সহিত এক পঙক্তিতে বসিবার যোগ্য নহে । কিন্তু চমৎকার শৃঙ্খলা। কাহার কত মূল্য এবং মর্যাদা তাহা বহুকাল হইতে স্থির হইয়া গেছে, তাহার রেখামাত্র ইতস্তত হইবার জো নাই। সকলেই যথানির্দিষ্টমতে আপন আপনি কাজ করিয়া যায় । বংশাবলিক্রমে কেবল পূর্ববর্তীদিগের উপর দাগ বুলাইয়া চলা। সে যে কী কাজ তাহা বিদেশীর পক্ষে বোঝা শক্ত । হঠাৎ খেলা বলিয়া ভ্রম হয়। কেবল নিয়মে । চলাফেরা, নিয়মে যাওয়া-আসা, নিয়মে ওঠাপড়া। অদৃশ্য হন্তে তাহাদিগকে চালনা করিতেছে এবং তাহারা। চলিতেছে। “ج۔ তাহাদের মুখে কোনো ভাবের পরিবর্তন নাই। চিরকাল একমাত্র ভাব ছাপ মারা রহিয়াছে। যেন সুজলাংক হতো। মাতার আলােহঁতে মঞ্চলৈ আৰু পরে মূল পৰ্ক অবকা সম্ভারে রাহিয়াছে । কখনো কাহাকেও চিন্তা করিতে হয় না, বিবেচনা করিতে হয় না ; সকলেই মীেন নিজীবিভাবে নিঃশব্দে পদচারণা করিয়া বেড়ায় ; পতনের সময় নিঃশব্দে পড়িয়া যায় এবং অবিচলিত মুখশ্ৰী লইয়া চিৎ হইয়া । আকাশের দিকে তাকাইয়া থাকে । ስm.. কাহারও কোনাে আশা নাই, অভিলাষ নাই, ভয় নাই, নূতন পথে চলিবার চেষ্টা নাই, হাসি নাই, কান্না নাই, সন্দেহ নাই, দ্বিধা নাই। খাচার মধ্যে যেমন পাখি বটুপটু করে, এই চিত্ৰিতবং মূর্তিগুলির অন্তরে সেরূপ কোনো-একটা জীবন্ত প্ৰাণীর অশান্ত আক্ষেপের লক্ষণ দেখা যায় না । 可。 অথচ এককালে এই খাচাগুলির মধ্যে জীবের বসতি ছিল- তখন ধােচাদুলিত এবং ভিতর হইতে পাখার শব্দ এবং গান শোনা যাইত। গভীর অরণ্য এবং বিস্তৃত আকাশের কথা মনে পড়ত।- এখন কেবল