পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

邻g冈 S)ዓዒ যেখানে যথার্থ বিরাম, সেখানে স্নেহময় সুমিষ্ট স্বরে শুনিতম আমার কথাটি ফুরোল, - নটে গাছটি মুড়োল। । এখন বয়স হইয়াছে, এখন গল্পের ঠিক মাঝখানটাতে হঠাৎ থামিয়া গিয়া একটা নিষ্ঠুর কঠিন কণ্ঠে শুনিতে જોર - আমার কথাটি ফুরোল না, নটে গাছটি মুড়োল না। एकन (नना भूgलि (न किन । (Os (SPG– দূর হউক গে, ঐ নিরীহ প্রাণীটির নাম করিয়া কাজ নাই। আবার কে কোনদিক হইতে গায়ে পাতিয়া লাইবে । আষাঢ় ১৩০০ শান্তি প্রথম পরিচ্ছেদ । দুখিরাম রুই এবং ছিদাম রুই দুই ভাই সকালে যখন দা হাতে লইয়া জন খাটিতে বাহির হইল তখন তাঁহাদের দুই স্ত্রীর মধ্যে বকবিকি চেঁচামেচি চলিতেছে। কিন্তু প্রকৃতির অন্যান্য নানাবিধ নিত্য কলরবের ন্যায় এই কলহ-কোলাহলও পাড়াসুদ্ধ লোকের অভ্যাস হইয়া গেছে। তীব্র কণ্ঠস্বর শুনিবামাত্র লোকে পরস্পরকে বলে- “ঐ রে, বাধিয়া গিয়াছে’, অর্থাৎ যেমনটি আশা করা যায় ঠিক তেমনিটি ঘটিয়াছে, আজও স্বভাবের নিয়মের কোনােরূপ ব্যত্যয় হয় নাই। প্রভাতে পূর্ব দিকে সূর্য উঠিলে যেমন কেহ তাহার কারণ জিজ্ঞাসা করে না, তেমনি এই কুরিদের বাড়িতে দুই জায়ের মধ্যে যখন একটা হৈ হৈ পড়িয়া যায় তখন তাহার কারণ নির্ণয়ের জন্য কাহারও কোনোরূপ কৌতুহলের উদ্রেক হয় না। অবশ্য এই কেন্দল-আন্দোলন প্রতিবেশীদের অপেক্ষা দুই স্বামীকে বেশি স্পর্শ করিত সন্দেহ নাই, কিন্তু সেটা তাহারা কোনোরূপ অসুবিধার মধ্যে গণ্য করিত না। তাহারা দুই ভাই যেন দীর্ঘ সংসারপথ একটা এক্কাগাড়িতে করিয়া চলিয়াছে, দুই দিকের দুই স্প্রিংবিহীন চাকার অবিশ্রাম ছড়ছড়া খড়খড় শব্দটাকে জীবনরথযাত্রার একটা বিধিবিহিত নিয়মের মধ্যেই ধরিয়া লইয়াছে। বরঞ্চ ঘরে যেদিন কোনো শব্দমাত্র নাই, সমস্ত থমথম ছমছম করিতেছে, সেদিন একটা আসন্ন অনৈসৰ্গিক উপদ্রবের আশঙ্কা জন্মিত, সেদিন যে কখন কী হইবে তাহা কেহ হিসাব করিয়া বলিতে পারিত না | আমাদের গল্পের ঘটনা যেদিন আরম্ভ হইল, সেদিন সন্ধ্যার প্রাক্কালে দুই ভাই যখন জন খাটিয়া শ্ৰান্তদেহে ঘরে ফিরিয়া আসিল, তখন দেখিল, স্তব্ধ গৃহ গমগম করিতেছে। বাহিরেও অত্যন্ত গুমটি । দুই-প্রহরের সময় খুব একপশলা বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে। এখনো চারিদিকে মেঘ জমিয়া আছে। বাতাসের লেশমাত্র নাই। বর্ষায় ঘরের চারিদিকে জঙ্গল এবং আগাছগুলা অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিয়াছে, সেখান হইতে এবং জলমগ্ন পাটের খেত হইতে সিক্ত উদ্ভিজের ঘন গান্ধবাষ্প চতুর্দিকে একটি নিশ্চল প্রাচীরের মতো জমাট হইয়া দাড়াইয়া আছে। গোয়ালের পশ্চাদবর্তী ডোবার মধ্য হইতে ভেক ডাকিতেছে এবং ঝিল্লিরবে সন্ধ্যার নিস্তব্ধ আকাশ একেবারে পরিপূর্ণ। অদূরে বর্ষার পদ্মা নবমেঘাচ্ছায়ায় বড়ো স্থির ভয়ংকর ভােব ধারণ করিয়া চলিয়াছে। শস্যক্ষেত্রের অধিকাংশই ভাঙিয়া লোকালয়ের কাছাকাছি আসিয়া পড়িয়ছে। এমনকি, ভাঙনের ধারে দুই-চারিটা