পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8やや রবীন্দ্র-রচনাবলী যে-সমােদরটা পাইয়াছিল তাহা স্বয়ং রণজিতসিংহের পক্ষেও কম হইত না। সে একে বিদেশী তাহতে পাঞ্জাবি-ইহাতেই আমাদের মনহরণ করিয়া লইয়াছিল। পুরাণে ভীমাৰ্জ্জুনের প্রতি যেরকম শ্রদ্ধা ছিল, এই পাঞ্জাবি জাতের প্রতিও মনে সেই প্রকারের একটা সন্ত্রম ছিল। ইহারা যোদ্ধা— ইহারা কোনো কোনো লড়াইয়ে হরিয়াছে বটে, কিন্তু সেটাকেও ইহাদের শত্রুপক্ষেরই অপরাধ বলিয়া গণ্য করিয়াছি। সেই জাতের লেনুকে ঘরের মধ্যে পাইয়া মনে খুব একটা স্ফীতি অনুভব করিয়াছিলাম। বউঠাকুরানীর” ঘরে একটা কাচাবরণে-ঢাকা খেলার জাহাজ ছিল, তাহাতে দম দিলেই রঙকরা কাপড়ের ঢেউ ফুলিয়া ফুলিয়া উঠিত এবং জাহাজটা আৰ্গিন-বাদ্যের সঙ্গে দুলিতে থাকিত। অনেক অনুনয় বিনয় করিয়া এই আশ্চর্য সামগ্ৰীটি বউঠাকুরানীর কােছ হইতে চাহিয়া লইয়া, প্রায় মাঝে মাঝে এই পাঞ্জাবিকে চমৎকৃত করিয়া দিতাম। ঘরের খাচায় বন্ধ ছিলাম বলিয়া যাহা কিছু বিদেশের, যাহা কিছু দূরদেশের, তাহাঁই আমার মনকে অত্যন্ত টানিয়া লাইত। তাই লেনুকে লইয়া ভারি ব্যস্ত হইয়া পড়তাম। এই কারণেই গাব্রিয়েল বলিয়া একটি য়িহুদি তাহার ঘুণ্টি-দেওয়া য়িহুদি পোশাক পরিয়া যখন আতর বেচিতে আসিত, আমার মনে ভারি একটা নাড়া দিত, এবং ঝোলাবুলিওয়ালা ঢিলঢালা ময়লা পায়জামা-পরা বিপুলকায় কাবুলিওয়ালও আমার পক্ষে ভীতিমিশ্রত রহস্যের সামগ্ৰী ছিল । যাহা হউক, পিতা যখন আসিতেন। আমরা কেবল আশপাশ হইতে দূরে তাহার চাকরিবাকিরদের মহলে ঘুরিয়া ঘুরিয়া কৌতুহল মিটাইতাম। র্তাহার কাছে পীেছানো ঘটিয়া উঠিত না। বেশ মনে আছে, আমাদের ছেলেবেলায় কোনো এক সময়ে ইংরেজ গবর্মেন্টের চিরন্তন জুজুরাসিয়ান -কর্তৃক ভারত-আক্রমণের আশঙ্কা লোকের মুখে আলোচিত হইতেছিল। কোনো হিতৈষিণী আত্মীয়া আমার মায়ের কাছে সেই আসন্ন বিপ্লবের সম্ভাবনাকে মনের সাথে পল্লবিত করিয়া বলিয়াছিলেন । পিতা তখনই পাহাড়ে ছিলেন। তিব্বত ভেদ করিয়া হিমালয়ের কোন একটা ছিদ্রপথ দিয়া যে রুসীয়েরা সহসা ধূমকেতুর মতো প্রকাশ পাইবে, তাহা তো বলা যায় না। এইজন্য মার মনে অত্যন্ত উদবেগ উপস্থিত হইয়াছিল। বাড়ির লোকেরা নিশ্চয়ই কেহ তাহার এই উৎকণ্ঠার সমর্থন করেন নাই। মা সেই কারণে পরিণতবয়স্ক দলের সহায়তালাভের চেষ্টায় হতাশ হইয়া শেষকালে এই বালককে আশ্রয় করিলেন । আমাকে বলিলেন, “রাসিয়ানদের খবর দিয়া কর্তকে একখানা চিঠি লেখে তো।” মাতার উদবেগ বহন করিয়া পিতার কাছে সেই আমার প্রথম চিঠি। কেমন করিয়া পাঠ লিখিতে হয়, কী করিতে হয় কিছুই জানি না। দফতরখানায় মহানন্দ মুনশির” শরণাপন্ন হইলাম। পাঠ যথাবিহিত হইয়াছিল সন্দেহ নাই। কিন্তু ভাষাটাতে জমিদারি সেরেস্তার সরস্বতী যে জীৰ্ণ কাগজের শুষ্ক পদ্মদলে বিহার করেন তাঁহারই গন্ধ মাখানো ছিল। এই চিঠির উত্তর পাইয়াছিলাম। তাহাতে পিতা লিখিয়ছিলেন- ভয় করিবার কোনো কারণ নাই, রাসিয়ানকে তিনি স্বয়ং তাড়াইয়া দিবেন। এই প্রবল আশ্বাসাবাণীতেও মাতার রসিয়ানভীতি দূর হইল বলিয়া বােধ হইল না— কিন্তু পিতার সম্বন্ধে আমার সাহস খুব বাড়িয়া উঠিল। তাহার পর হইতে রোজই আমি তাহকে পত্ৰ লিখিবার জন্য মহানদের দফতরে হাজির হইতে লাগিলাম। বালকের উপদ্রবে অস্থির হইয়া কয়েকদিন মহানন্দ খসড়া করিয়া দিল। কিন্তু মাসুলের সংগতি তো নাই। মনে ধারণা ছিল, মহানন্দের হাতে চিঠি সমৰ্পণ করিয়া দিলেই বাকি দায়িত্বের কথা আমাকে আর চিন্তা করিতেই হইবে না- চিঠি অনায়াসেই যথাস্থানে গিয়া পেঁৗছবে । বলা বাহুল্য, মহানন্দের বয়স আমার চেয়ে অনেক বেশি ছিল এবং এ-চিঠিগুলি হিমাচলের শিখর পর্যন্ত পীেহে নাই। 弱 বহুকাল প্রবাসে থাকিয়া পিতা অল্প কয়েক দিনের জন্য যখন কলিকাতায় আসিতেন, তখন তাহার প্রভাবে যেন সমস্ত বাড়ি ভরিয়া উঠিয়া গম গম করিতে থাকিত। দেখিতাম, গুরুজনেরা গায়ে জোব্বা পরিয়া, সংযত পরিচ্ছন্ন হইয়া, মুখে পান থাকিলে তাহ বহিরে ফেলিয়া দিয়া তাহার কাছে। যাইতেন। • कानी (कानैि] oी, शििजनाएका गी S R Q Styrer - fÇ YAo e a wala, ' &