পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शैक्नयूछि 88) খাপ খাওয়া অসম্ভব হইয়া উঠিল। হায়,সকল জিনিসের মতোই গল্পও পুরাতন হয়, জািন হইয়া যায়, যে গল্প বলে তাহার গীেরবের পুঁজি ক্রমেই ক্ষীণ হইয়া আসিতে থাকে। এমনি করিয়া পুরাতন গল্পের উজ্জ্বলতা যতই কমিয়া আসে ততই তাঁহাতে এক এক পেঁচা করিয়া নূতন রঙ লগাইতে হয়। পাহাড় হইতে ফিরিয়া আসার পর ছাদের উপরে মাতার বায়ুসেবনসভায় আমিই প্রধানবক্তার পদ লাভ করিয়ছিলাম। মার কাছে যশাৰী হইবার প্রলোভন ত্যাগ করা কঠিন এবং যশ লাভ করাটাও অত্যন্ত দুরূহ নহে | | নর্মাল স্কুলে পড়বার সময় যেদিন কোনো একটি শিশুপাঠ প্রথম দেখা গেল। সূর্য পৃথিবীর চেয়ে চৌদলক্ষগুণে বড়ো সেদিন মাতার সভায় এই সত্যটাকে প্রকাশ করিয়াছিলাম। ইহাতে প্ৰমাণ হইয়াছিল, যাহাকে দেখিতে ছোটাে সেও হয়তো নিতান্ত কম বড়ো নয়। আমাদের পাঠ্য ব্যাকরণে কাব্যালংকার অংশে যে-সকল কবিতা উদাহৃত ছিল তাঁহাই মুখস্থ করিয়া মাকে বিঘ্নিত করিতাম। তাহার একটা আজও মনে SW感|一 ওরে আমার মাছি। ! আহা কী নম্ৰতা ধর, এসে হাত জোড় করা, কিন্তু কেন বারিকর তীক্ষা গুড়গাঁহি ! সম্প্রতি প্রকটরের গ্রন্থ হইতে গ্ৰহতার সম্বন্ধে অল্প যে-একটু জানলাভ করিয়ছিলাম তাহাও সেই দক্ষিণবায়ুবীজিত সান্ধ্যসমিতির মধ্যে বিবৃত করিতে লাগিলাম। আমার পিতার অনুচর কিশোরী চাটুর্জে এককালে পাচলির দলের গায়ক ছিল। সে আমাকে পাহাড়ে থাকিতে প্ৰায় বলিত, “আহা দাদাজি, তোমাকে যদি পাইতাম তবে পািচলির দল এমন জমাইতে পারিতাম, সে আর কী বলিব ।” শুনিয়া আমার ভারি লোভ হইত- পাচলির দলে ভিড়িয়া দেশদেশান্তরের গান গাহিয়া বেড়ানোটা মহা একটা সৌভাগ্য বলিয়া বোধ হইত। সেই কিশোরীর কাছে অনেকগুলি পাচলির গান শিখিয়ছিলাম, ‘ওরে ভাই, জানকীরে দিয়ে এসো বন, 'প্ৰাণ তো অন্ত হল আমার কমল-আঁখি, রাঙা জবায় কী শোভা পায় পায়, কাতরে রেখে রাঙা পায়, মা অভয়ে, “ভাবো শ্ৰীকান্ত নরকান্তকারীরে নিতান্ত কৃতান্ত ভয়ান্ত হবে ভবে- এই গানগুলিতে’ আমাদের আসর। যেমন জমিয়া উঠিত এমন সূর্যের অগ্নি-উন্মস বা শনির চন্দ্ৰময়তার আলোচনায় হইত না । পৃথিবীসুদ্ধ লোকে কৃত্তিবাসের বাংলা রামায়ণ পড়িয়া জীবন কাটায়, আর আমি পিতার কাছে স্বয়ং মহর্ষি বাল্মীকির স্বরচিত অনুষ্ঠুভ ছন্দের রামায়ণ পড়িয়া আসিয়াছি, এই খবরটাতে মাকে সকলের চেয়ে বেশি বিচলিত করিতে পারিয়াছিলাম। তিনি অত্যন্ত খুশি হইয়া বলিলেন, “আচ্ছা, বাছা, সেই রামায়ণ আমাদের একটু পড়িয়া শোনা দেখি।” হায়, একে ঋজু পাঠের সামান্য উদঘৃত অংশ, তাহর মধ্যে আবার আমার পড়া অতি অল্পই, তাহাও পড়িতে গিয়া দেখি মাঝে মাঝে অনেকখানি অংশবিস্মৃতিবশত অস্পষ্ট হইয়া আসিয়াছে। কিন্তু যে-মা পুত্রের বিদ্যাবুদ্ধির অসামান্যতা অনুভব করিয়া আনন্দসভোগ করিবার জন্য উৎসুক হইয়া বসিয়াছেন, তাহাকে ভুলিয়া গেছি বলিবার মতো শক্তি আমার ছিল না। সুতরাং ঋতুপাঠ হইতে যেটুকু পড়িয়া গেলাম তাহার মধ্যে বাল্মীকির রচনা ও আমার ব্যাখ্যার মধ্যে অনেকটা পরিমাণে অসামঞ্জস্য রহিয়া গেল। স্বৰ্গ হইতে স্নেহহাস্যে মার্জনা করিয়াছেন, কিন্তু দৰ্পহারী মধুসূদন আমাকে সম্পূর্ণ নিকৃতি দিলেন না। মা মনে করিলেন, আমার স্বারা অসাধ্যসাধন হইয়াছে, তাই আর সকলকে বিজিত করিয়া দিবার অভিপ্ৰায়ে তিনি কহিলেন, "একবার দ্বিজেন্দ্রকে শোনা দেখি।” তখন মনে-মনে সমূহ বিপদ গনিয়া প্রচুর আপত্তি করিলাম। মা কোনোমতেই শুনিলেন না। বড়দাদাকে ডাকিয়া পঠাইলেন। বড়দাদা আসিতেই S प्रएिछ मानषेि ब्रम्न ২ “ঋৰূপাঠ দ্বিতীয় ভাগ হইতে কৈকেয়ীদশরথ,সংবাদ"- পাণ্ডুলিপি ।