পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Bey রবীন্দ্র-রচনাবলী তিনি আমাকে খুব-একটা বড়ো রকমের স্বাধীনতা দিয়াছিলেন ; তাহার সংস্রবে। আমার ভিতরকার সংকোচ ঘুচিয়া গিয়াছিল। এইরূপ স্বাধীনতা আমাকে আর-কেহ দিতে সাহস করিতে পারিত না- সেজন্য হয়তো কেহ কেহ ঠাহকে নিন্দাও করিয়াছে। কিন্তু প্রখর। শ্ৰীজের পরে বর্ষার যেমন প্রয়োজন, আমার পক্ষে আশৈশব বাধনিষেধের পরে এই স্বাধীনতা তেমনি অত্যাবশ্যক ছিল। সে সময়ে এই বন্ধনমুক্তি না ঘটিলে “চিরজীবন একটা পঙ্গুতা থাকিয়া যাইত। প্রকলপক্ষেরা সর্বদাই স্বাধীনতার অপব্যবহার লইয়া খোঁটা দিয়া স্বাধীনতাকে খর্ব করিতে চেষ্টা করিয়া থাকে, কিন্তু স্বাধীনতার অপব্যয় করিবার যদি অধিকার না থাকে। তবে তাহাকে স্বাধীনতাই বলা যায় না। অপব্যয়ের দ্বারাই সদ্যয়ের যে-শিক্ষা হয় তাহাই ধটি শিক্ষা। অন্তত, আমি এ কথা জোর করিয়া বলিতে পারি- স্বাধীনতার দ্বারা যেটুকু উৎপাত ঘটিয়াছে তাহাতে আমাকে উৎপাতনিবারণের পন্থাতেই পীেহইয়া দিয়াছে। শাসনের দ্বারা, পীড়নের দ্বারা, কানমলা এবং কানে মন্ত্র-দেওয়ার দ্বারা, আমাকে যাহা কিছু দেওয়া হইয়াছে তাহ? আমি কিছুই গ্ৰহণ করি নাই। যতক্ষণ আমি আপনার মধ্যে আপনি ছাড়া না পাইয়াছি ততক্ষণ নিম্ফল বেদনা ছাড়া আর কিছুই আমি লাভ করিতে পারি নাই। জ্যোতিদাদাই সম্পূর্ণ নিঃসংকোচে সমস্ত ভালোমন্দর মধ্য দিয়া আমাকে আমার আত্মোপলব্ধির ক্ষেত্রে ছাড়িয়া দিয়াছেন, এবং তখন হইতেই আমার আপনি শক্তি নিজের কাটা ও নিজের ফুল বিকাশ করিবার জন্য প্ৰস্তুত হইতে পারিয়াছে। আমার এই অভিজ্ঞতা হইতে আমি যৌ-শিক্ষালাভ করিয়াছি তাহতে মন্দকেও আমি তত ভয় করি না ভালো করিয়া তুলিবার উপদ্রবকে যত ডরাই- ধৰ্মনৈতিক এবং রাষ্ট্রনৈতিক পানিটিভ পুলিসের পায়ে আমি গড় করি।- ইহাতে যে-দাসত্বের সৃষ্টি করে তাহার মতো বালাই জগতে আর-কিছুই নাই। 鱼 এক সময়ে পিয়ানো বাজাইয়া জ্যোতিদাদা নূতন নূতন সুর তৈরি করায় মাতিয়ছিলেন। প্রত্যহই তাহার অঙ্গুলি নৃত্যের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যবর্ষণ হইতে থাকিত। আমি এবং অক্ষয়বাবুর্তাহার সেইসদ্যোজাত সুরগুলিকে কথা দিয়া বঁধিয়া রাখিবার চেষ্টায় নিযুক্ত ছিলাম। গান ধধিবার শিক্ষানবিসি এইরূপে আমার আরম্ভ হইয়াছিল । আমাদের পরিবারে শিশুকাল হইতে গানচর্চার মধ্যেই আমরা বাড়িয়া উঠিয়াছি। আমার পক্ষে তাহার একটা সুবিধা এই হইয়াছিল, অতি সহজেই গান আমার সমন্ত প্রকৃতির মধ্যে প্রবেশ করিয়াছিল।” তাহার অসুবিধাও ছিল। চেষ্টা করিয়া গান আয়ত্ত করিবার উপযুক্ত অভ্যাস না হওয়াতে, শিক্ষা পাকা হয় নাই। সংগীতবিদ্যা বুলিতে যাহা বোঝায় তাহর মধ্যে কোনো অধিকার লাভ করতে পারি নাই । সাহিত্যের সঙ্গী হিমালয় হইতে ফিরিয়া আসার পর স্বাধীনতার মাত্রা কেবলই বাড়িয়া চলিল। চাকরীদের শাসন গেল, ইস্কুলের বন্ধন নানা চেষ্টায় ছেদন করিলাম, বাড়িতেও শিক্ষাকদিগকে আমল দিলাম না। আমাদের পূর্বশিক্ষক জ্ঞানবাবু আমাকে কিছু কুমারসম্ভব, কিছু আর দুই-একটা জিনিস এলেমেলোভাবে পড়াইয়া ওকালতি করিতে গেলেন। তঁহার পর শিক্ষক আসিলেন ব্ৰজবাৰু। তিনি আমাকে প্রথমদিন গোলডুস্মিথের ভিকর অফ ওয়েককীলডু হইতে তর্জমা করিতে দিলেন। সেটা আমার মন্দ লাগিল না। তাহার পরে শিক্ষার BD DBDB BuDBD BDBDB BD DB BB DBDD Buiu DDDBD D DDBB বাড়ির লোকেরা আমার হল হাড়িয়া দিলেন। কোনোদিন আমার কিন্তু হইবে এমন আশা, না। আমার না আর-কাহারও মনে রহিল। কাজেই কোনোকিছুর ভরসা না। রাখিয়া আপন মনে কেবল কবিতার খাতা ভরাইতে লাগিলাম। সে-লেখাও তেমনি। মনের মধ্যে আর কিছুই নাই, কেবল তপ্ত বাষ্প আছে- সেই ১ “কৰে যে গান গাহিতে পরিতাম না। তাহা মনে পক্ষে না - পাণ্ডুলিপি ২ জিলাখ লে, “মেট্রোপলিটান ইন্সটিটিউসনের সুপারিস্টেভেন্ট।” ত্ৰ বৰ্তমান গ্ৰন্থ, পৃ. ৪৬২ |