পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। औरनबूटेि 86 ভাষ্য যেমন অনেক বেশি হয় তেমনিষ্ঠােহর উৎসাহের তুমুল হাতনাড়া তাহার ক্ষীণকণ্ঠকে বহুদূরে ছাড়াইয়া গেল ; তলের বেঁকে মাথা নাড়িতে লাগিলেন এবং তঁহায় পাকা দড়ির মধ্যে ঝড়ের হাওয়া মাতামতি করিতে লাগিল। অনেক রাত্রে গাড়ি করিয়া বাড়ি ফিরিলাম। তখন বড়বাদল থামিয়া তারা ফুটিয়াছে। অন্ধকার নিবিড়, আকাশ নিন্তৰ, পাড়াগায়ের পথ নির্জন, কেবল দুইধারের কনশ্রেণীর মধ্যে দলে দলে জোনাকি যেন নিঃশব্দে মুঠা মুঠ আগুনের হরির লুট হইতেছে। স্বদেশে দিয়াশালই প্রভৃতির কারখানা স্থাপন করা আমাদের সভার উদ্দেশ্যের মধ্যে একটি ছিল। এজন্য সভেরা তাহদের আয়ের দশমাংশ এই সভায় দান করতেন। দেশলাই তৈরি করিতে হইবে, তাহার কাঠি পাওয়া শক্ত। সকলেই জানেন, আমাদের দেশে উপযুক্ত হাতেখেরোকাঠির মধ্য দিয়া সন্তায় প্রচুর পরিমাণে তেজ প্রকাশ পায় কিন্তু সে-তেজে যাহা জ্বলে তাহ দেশলাই নহে। অনেক পরীক্ষার পর বাক্সকিয়েক দেশলাই তৈরি হইল। ভারতসন্তানদের উৎসাহের নিদর্শন বলিয়াই যে তাহারা মূল্যবান তাহা নহেআমাদের এক বাক্সে যে-খরচ পড়িতে লাগিল তাঁহাতে একটা পল্লীর সম্বৎসরের চুল ধরানো চলিত। আরো একটু সামান্য অসুবিধা এই হইয়াছিল যে, নিকটে অগ্নিশিখা না থাকিলে তাহাদিগকে জ্বালাইয়া তােলা সহজ ছিল না। দেশের প্রতি জ্বলন্ত অনুরাগ যদি তাহদের জ্বলনশীলতা বাড়াইতে পারিত, তবে আজ পর্যন্ত তাহারা বাজারে চালিত । খবর পাওয়া গেল, একটি কোনো অল্পবয়স্ক ছাত্র কাপড়ের কল তৈরি করিবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত; গেলাম তাহার কল দেখিতে। সেটা কোনো কাজের জিনিস হইতেছে কি না তাহা কিছুমাত্ৰ বুঝিবার শক্তি আমাদের কাহারও ছিল না- কিন্তু বিশ্বাস করিবার ও আশা করিবার শক্তিতে আমরা কাহারও চেয়ে খাটাে ছিলাম না। যন্ত্র তৈরি করিতে কিছু দেনা হইয়াছিল, আমরা তাহা শোধ করিয়া দিলাম। অবশেষে একদিন দেখি ব্ৰজবাবু মাথায় একখানা গামছা বধিয়া জোড়াসাঁকোর বাড়িতে আসিয়া উপস্থিত। কহিলেন, “আমাদের কলে এই গামছার টুকরা তৈরি হইয়াছে।” বলিয়া দুই হাত তুলিয়া তাণ্ডব নৃত্য- তখন ব্ৰজবাবুর মাথার চুলে পাক ধরিয়াছে। অবশেষে দুটি একটি সুবুদ্ধি লোক আসিয়া আমাদের দলে ভিড়িলেন, আমাদিগকে জ্ঞানবৃক্ষের ফল খাওয়াইলেন এবং এই স্বৰ্গলোক ভাঙিয়া গেল । ছেলেবেলায় রাজনারায়ণবাবুর সঙ্গে যখন আমাদের পরিচয় ছিল তখন সকল দিক হইতে র্তাহাকে বুঝিবার শক্তি আমাদের ছিল না। তাহার মধ্যে নানা বৈপরীত্যের সমাবেশ ঘটিয়াছিল। তখনই তাহার চুলদাড়ি প্রায় সম্পূর্ণ পাকিয়াছে কিন্তু আমাদের দলের মধ্যে বয়সে সকলের চেয়ে যে ব্যক্তি ছােটাে তার সঙ্গেও তাহার বয়সের কোনো অনৈক্য ছিল না। তঁহার বাহিরের প্রবীণতা শুত্র মোড়কটির মতো হইয়া তাহার অন্তরের নবীনতাকে চিরদিন তাজা করিয়া রাখিয়া দিয়াছিল। এমনকি, প্রচুর পণ্ডিত্যেও ষ্ঠ্যুহার কোনো ক্ষতি করিতে পারে নাই, তিনি একেবারেই সহজ মানুষটির মতোই ছিলেন। জীবনের শেষ পর্যন্ত অজস্র হস্যোক্ষস কোনো বাধাই মানিল না— না বয়সের গভীৰ্য না অস্বাস্থ্য, না সংসারের দুঃখক, নমেধয়ান বহুনা শ্ৰতেন, কিছুতেই তাহার হাসির বেগকে ঠেকাইয়া রাখিতে পারে নাই। এক দিকে তিনি আপনার জীবন এবং সংসারটিকে ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণ নিবেদন করিয়া দিয়াছিলেন, আর-একদিকে দেশের উন্নতিসাধন করিবার জন্য তিনি সর্বদাই কতরকম সাধ্য ও অসাধ্য প্ল্যান করিতেন তাহার। আর অন্ত নাই। রিচার্ডসনের” তিনি প্রিয় ছাত্র, ইংরেজি বিদ্যাতেই বাল্যকাল হইতে তিনি মানুষ কিন্তু তবু অনভ্যাসের সমস্ত বাধা ঠেলিয়া ফেলিয়া বাংলাভাষা ও সাহিত্যের মধ্যে পূর্ণ উৎসাহ ও শ্রদ্ধার বেগে তিনি প্রবেশ করিয়াছিলেন। এদিকে তিনি মাটির মানুষ কিন্তু তেজে একেবারে পরিপূর্ণ ছিলেন। দেশের প্রতিষ্ঠাহার যে প্রবল অনুরাগ সে তাহার সেই তেজের জিনিস। দেশের সমন্ত খর্বতা দীনতা অপমানকে তিনি দগ্ধ করিয়া ফেলিতে চাহিতেন। তাহার দুইচক্ষু জ্বলিতে থাকিত, তাহার হৃদয় দীপ্ত হইয়া উঠিত, উৎসাহের সঙ্গে হাত সুমুনির সঙ্গে মিলিয়া ভিন্ন গান ধরন্সে-লি স্কুলগুৰু আয়ন মাগুৰু সে তিনি খেয়ালই Capt. D. L. Richardson (Hindu College, 1835-43)