পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

औदनठि 8r সন্ধ্যাসংগীত’ নিজের মধ্যে অবরুদ্ধ যে অবস্থার কথা পূর্বে লিখিয়ছি, মোহিতবাবু কর্তৃক সম্পাদিত আমার গ্রন্থাবলীতে’ সেই অবস্থার কবিতাগুলি হৃদয়-অরণ্য” নামের দ্বারা নির্দিষ্ট হইয়াছে। প্রভাতসংগীতে "পুনর্মিলন’-নামক কবিতায়” আছে হৃদয় নামেতে এক বিশাল অরণ্য আছে দিশেদিশে নাহিক কিনারা, তারি মাঝে হনুপথহারা। সে-বন আঁধারে ঢাকা, গাছের জটিল শাখা সহস্ৰ জেহের বাহু দিয়ে আঁধার পালিছে বুকে নিয়ে - হৃদয়-অরণ্য নাম এই কবিতা হইতে গ্ৰহণ করা হইয়াছে । এইরূপে বাহিরের সঙ্গে যখন জীবনটার যোগ ছিল না, যখন নিজের হৃদয়েরই মধ্যে আবিষ্ট অবস্থায় ছিলাম, যখন কারণহীন আবেগ ও লক্ষ্যহীন আকাঙ্ক্ষার মধ্যে আমার কল্পনা নানা ছদ্মবেশে ভ্ৰমণ করিতেছিল, তখনকার অনেক কবিতা নূতন গ্রন্থাবলী হইতে বর্জন করা হইয়াছে- কেবল সন্ধ্যাসংগীতে-প্রকাশিত কয়েকটি কবিতা হৃদয়-অরণ্য বিভাগে স্থান পাইয়াছে। একসময়ে জ্যোতিদাদারা দূরদেশে ভ্ৰমণ করিতে গিয়াছিলেন- তেতালার ছাদের ঘরগুলি শূন্য ছিল। সেইসময় আমি সেই ছাদ ও ঘর অধিকার করিয়া নির্জন দিনগুলি যাপন করতাম । এইরূপে যখন আপন মনে একা ছিলাম তখন, জানি না কেমন করিয়া, কাব্যরচনার যে সংস্কারের মধ্যে বেষ্টিত ছিলাম সেটা খসিয়া গেল। আমার সঙ্গীরা যে-সব কবিতা ভালোবাসিতেন ও তাহদের নিকট খ্যাতি পাইবার ইচ্ছায় মন স্বভাবতই যে সব কবিতার ছাচে লিখিবার চেষ্টা করিত, বােধ করি তাহারা দূরে যাইতেই আপনা-আপনি সেই সকল কবিতার শাসন হইতে আমার চিত্ত মুক্তিলাভ করিল। একটা প্লেট লইয়া কবিতা লিখিতাম। সেটাও বোধ হয় একটা মুক্তির লক্ষণ । তাহার আগে কোমর বাধিয়া যখন খাতায় কবিতা লিখিতাম তাহার মধ্যে নিশ্চয়ই রীতিমত কাব্য লিখিবার একটা পণ ছিল, কবিযাগের পাকা সেহায় সেগুলি জমা হইতেছে বলিয়া নিশ্চয়ই অন্যের সঙ্গে তুলনা করিয়া মনে মনে হিসাব মিলাইবার একটা চিন্তা ছিল। কিন্তু প্লেটে যাহা লিখিতাম তাহা লিখিবার খেয়ালেই লেখা । প্লেট জিনিসটা বলে- ভয় কী তোমার, যাহা খুশি তাঁহাই লেখে-না, হাত বুলাইলেই তো মুছিয়া যাইবে । কিন্তু এমনি করিয়া দুটাে-একটা কবিতা লিখিতেই মনের মধ্যে ভারি-একটা আনন্দের আবেগ আসিল । আমার সমস্ত অন্তঃকরণ বলিয়া উঠিল— বাঁচিয়া গেলাম, যাহা লিখিতেছি, এ দেখিতেছি সম্পূর্ণ আমারই। ইহাকে কেহ যেন গর্বোচ্চািস বলিয়া মনে না করেন। পূর্বের অনেক রচনায় বরঞ্চ গর্ব ছিল- কারণ গৰ্বই সে-সব লেখার শেষ বেতন। নিজের প্রতিষ্ঠা সম্বন্ধে হঠাৎ নিঃসংশয়তা অনুভব করিবার যে পরিতৃপ্তি তাহাকে অহংকার বলিব না। ছেলের প্রতি মা-বাপের প্রথম যে আনন্দ সে ছেলে সুন্দর বলিয়া নহে, ছেলে যথার্থ আমারই বলিয়া। ইহার সঙ্গে সঙ্গে ছেলের গুণ স্মরণ করিয়া তাহারা গর্ব অনুভব করিতে পারেন। কিন্তু সে আর-একটা জিনিস। এই স্বাধীনতার প্রথম আনন্দের বেগে ছন্দোবন্ধকে আমি একেবারেই খাতির করা ছাড়িয়া দিলাম। নদী যেমন কাটাখালের মতো সিধা চলে না- আমার ছন্দ তেমনি আঁকিয়া বঁকিয়া নানা মূর্তি ধারণ করিয়া চলিতে লাগিল। আগে হইলে এটাকে অপরাধ বলিয়া গণ্যকরিতাম। কিন্তু এখন লেশমাত্র সংকোচ বোধ হইল না। স্বাধীনতা আপনাকে প্রথম প্রচার করিবার সময় নিয়মকে ভাঙে, তাহার পরে y eropo > >ww (Seviyor)- arker-Römer » ২ মোহিতচন্দ্র সেন কর্তৃক সম্পাদিত- কাব্যগ্রন্থ (১-১ ভাগ, ১৩১০) e a ga q5aRúì & . \g viāề, bā &&và