পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s ¢ዓ $ যে লোক অনন্তকে বাদ দিয়ে অন্তের উপাসনা করে সে অন্ধকারে ডোবে। আর যে অন্তকে বাদ দিয়ে অনন্তের উপাসনা করে সে আরো বেশি অন্ধকারে ডোবে। 曾 বিদ্যাঞ্চবিদ্যাঞ্চ যন্তস্থেদোভয়ং সহ । अविप्रोग्रा भूट्रार जैईी दिमाग्राभूठभन्ध्रप्ठ। অন্তকে অনন্তকে যে একত্র করে জানে সেই অন্তের মধ্য দিয়ে মৃত্যুকে উত্তীর্ণ হয় আর অনন্তের মধ্যে অমৃতকে 에 v "তাই বলে সীমা ও অসীমের ভেদ একেবারেই ঘুচিয়ে দেখাই যে দেখা তাও নয় সে কথাও আছে। তারা বলছেন অন্ত এবং অনন্তের পার্থক্যও আছে। পার্থক্য যদি না থাকে তবে সৃষ্টি হয় কী করে ? আবার যদি বিরোধ থাকে তা হলেই বা সৃষ্টি হয় কী করে ? সেইজন্যে অসীম যেখানে সীমায় আপনাকে সংকুচিত করেছেন সেইখানেই তার সৃষ্টি সেইখানেই তার বহুত্ব- কিন্তু তাতে তার অসীমতাকে তিনি ত্যাগ করেন 简1 নিজের অস্তিত্বটার কথা চিন্তা করলে এ কথা বোঝা সহজ হবে। আমি আমার চলাফেরা কথাবার্তায় প্রতি মুহূর্তে নিজেকে প্রকাশ করছি- সেই প্রকাশ আমার আপনাকে আপনার সৃষ্টি। কিন্তু সেই প্রকাশের মধ্যে আমি যেমন আছি তেমনি সেই প্রকাশকে বহুগুণে আমি অতিক্রম করে আছি। আমার এক কোটিতে অন্ত আর-এক কোটিতে অনন্ত । আমার অব্যক্ত-আমি আমার ব্যক্তি-আমির যোগে সত্য। আমার ব্যক্তি-আমি আমার অব্যক্ত-আমির যোগে সত্য । তার পরে কথা এই যে, তবে এই আমিটা কোথা থেকে আসে। সেটাও আমার সম্পূর্ণ নিজক্স নয়। অসীম যেখানে আপনাকে সীমায় সংহত করেছেন সেখানেই অহংকার। সোহহমস্মি । সেখানেই তিনি হচ্ছেন আমি আছি। অসীমের বাণী অর্থাৎ সীমার মধ্যে অসীমের প্রকাশই হচ্ছে, অহমস্মি । আমি আছি। যেখানেই হওয়ার পালা আরম্ভ হল সেখানেই আমির পালা। সমস্ত সীমার মধ্যেই অসীম বলছেন, আহমস্মি । আমি আছি, এইটেই হচ্ছে সৃষ্টির ভাষা। এই এক আমি-আছিই লক্ষ লক্ষ আমি-আছিতে ছড়িয়ে পড়েছেন- তবু তার সীমা নেই। যদিচ আমার আমি-আছি সেই মহা আমি-আছির প্রকাশ কিন্তু তাই বলে এ কথা বলাও চলে না যে এই প্রকাশেই ঠার প্রকাশ সমাপ্ত। তিনি আমার আমি-আছির মধ্যেও যেমন আছেন তেমনি আমার আমি-আছিকে অতিক্রম করেও আছেন। সেইজন্যেই অগণ্য আমি-আছির মধ্যে যোগের পথ রয়েছে। সেইজন্যেই উপনিষৎ বলেছেন, সর্বভূতের মধ্যে যে লোক আত্মকে এবং আত্মার মধ্যে যে লোক সর্বভূতকে জানে সে আর গোপন থাকতে পারে না। আপনাকে সেই জানেনা যে লোক আপনাকে কেবল আপনি বলেই জানে, অন্যকেও যে আপনি বলে জানে না । তত্ত্বজ্ঞানে আমার কোনো অধিকার নেই-আমি সেদিক থেকে কিছু বলছিও নে। আমি সেই মূঢ় যে মানুষ বিচিত্রকে বিশ্বাস করে, বিশ্বকে সন্দেহ করে না। আমি নিজের প্রকৃতির ভিতর থেকেই জানি দূরও সত্য নিকটও সত্য, স্থিতিও সত্য গতিও সত্য। অণু-পরমাণু যুক্তির দ্বারা বিশ্লিষ্ট এবং ইন্দ্ৰিয় মনের আশ্রয় থেকে একেবারে ভ্ৰষ্ট হতে হতে ক্ৰমে আকার-আয়তনের অতীত হয়ে প্ৰলয়সাগরের তীরে এসে দাঁড়ায়, সেটা আমার কাছে বিস্ময়কর বা মনোহর বোধ হয় না। রূপই আমার কাছে আশ্চৰ্য, রসই আমার কাছে মনোহর । সকলের চেয়ে আশ্চর্য এই যে, আকারের ফোয়ারা নিরাকায়ের হৃদয় থেকে নিত্যকাল উৎসারিত হয়ে কিছুতেই ফুরোতে চাচ্ছে না। আমি এই দেখেছি যেদিন আমার হৃদয় প্রেমে পূর্ণ হয়ে ওঠে সেদিন সূর্যালোকের উজ্জ্বলতা বেড়ে ওঠে, সেদিন চন্দ্ৰলোকের মাধুর্য ঘনীভূত হয়- সেদিন সমস্ত জগতের সুর এবং তালি নতুন তানে নতুন লয়ে বাজতে থাকে- তার থেকেই বুঝতে পারি, জগৎ আমার মন দিয়ে আমার । হৃদয় দিয়ে ওতপ্রোত। যে দুইয়ের যোগে সৃষ্টি হয় তার মধ্যে এক হচ্ছে আমার হৃদয় মন । আমি যখন বর্ষার গান গেয়েছি তখন সেই মেঘমাল্লারে জগতের সমন্তবর্ধর আক্রপাতধ্বনি নবতর ভাষা এবং অপূর্ব বেদনায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে, চিত্রকারের চিত্র, এবং কবির কাব্যে বিশ্বরহস্য নূতন রূপ এবং নূতন বেশ ধরে দেখা দিয়েছে- তার থেকেই জেনেছি। এই জগতের জল স্থল আকাশ আমার হৃদয়ের তন্তু দিয়ে বােনা, নইলে