পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচয় A. Voed যায় যখন দেখি সে আপনার বাহিরের জীৰ্ণ বেড়াগুলোকে ভেঙে আপনার অধিকার বিস্তার করছে। এই অধিকার-বিস্তারকে একদল লোক দোষ দেয়, বলে ওতে আমরা নিজেকে হারালুম- তারা জানে না নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া নিজেকে হারিয়ে যাওয়া নয়- কারণ বৃদ্ধি মাত্রই নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া। সম্প্রতি আমাদের দেশে চিত্রকলার যে নবজীবন লাভের লক্ষণ দেখছি তার মূলেও সেই সাগরপারের রাজপুত্রের সোনার কাঠি আছে। কাঠি ছোওয়ার প্রথম অবস্থায় ঘুমের ঘোরটা যখন সম্পূর্ণ কাটে না, তখন আমরা নিজের শক্তি পুরোপুরি অনুভব করি নে, তখন অনুকরণটাই বড়ো হয়ে ওঠে, কিন্তু ঘোর কেটে গেলেই আমরা নিজের জোরে চলতে পারি। সেই নিজের জোরে চলার একটা লক্ষণ এই যে তখন আমরা পরের পথেও নিজের শক্তিতেই চলতে পারি। পথ নানা ; অভিপ্ৰায়টি আমার, শক্তিটি আমার। যদি পথের বৈচিত্র্য রুদ্ধ করি, যদি একই বাধা পথ থাকে, তা হলে অভিপ্ৰায়ের স্বাধীনতা থাকে না- তা হলে কলের চাকার মতাে চলতে হয়। সেই কলের চাকার পথটাকে চাকার স্বকীয় পথ বলে গীেরব করার মতাে অদ্ভুত প্ৰহসন আর জগতে নেই। আমাদের সাহিত্যে চিত্রে সমুদ্রপারের রাজপুত্র এসে পৌঁচেছে। কিন্তু সংগীতে পৌঁছয় নি। সেইজন্যেই আজও সংগীত জগতে দেরি করছে। অথচ আমাদের জীবন জেগে উঠেছে। সেইজনেই সংগীতের বেড়া টলমল করছে। এ কথা বলতে পারব না, আধুনিকের দল গান একেবারে বর্জন করেছে। কিন্তু তারা যে গান ব্যবহার করছে, যে গানে আনন্দ পাচ্ছে সে গান জাত-খোয়ানো গান। তার শুদ্ধাশুদ্ধ বিচার নেই। কীর্তনে বাউলে বৈঠকে মিলিয়ে যে জিনিস আজ তৈরি হয়ে উঠছে সে আচার-ভ্ৰষ্ট । তাকে ওস্তাদের দল নিন্দা করছে। তার মধ্যে নিন্দনীয়তা নিশ্চয়ই অনেক আছে। কিন্তু অনিন্দনীয়তাই যে সব চেয়ে বড়ো গুণ তা নয়। প্রাণশক্তি শিবের মতো অনেক বিষ হজম করে ফেলে। লোকের ভালো লাগছে, সবাই শুনতে চাচ্ছে, শুনতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে না- এটা কম কথা নয়। অর্থাৎ গানের পঙ্গুতা ঘুচল, চলতে শুরু করল। প্রথম চালটা সূর্বাঙ্গসুন্দর নয়, তার অনেক ভঙ্গি হাস্যকর এবং কুগ্ৰী-কিন্তু সব চেয়ে আশার কথা যে, চলতে শুরু করেছে- সে বঁাধন মানছে না | প্ৰাণের সঙ্গে সম্বন্ধই যে তার সব চেয়ে বড়ো সম্বন্ধ, প্রথার সঙ্গে সম্বন্ধটা নয়, এই কথাটা এখনকার এই গানের গোলমেলে হাওয়ার মধ্যে বেজে উঠেছে। ওস্তাদের কারদানিতে আর তাকে বেঁধে রাখতে পারবে না । r দ্বিজেন্দ্রলালের গানের সুরের মধ্যে ইংরেজি সুরের স্পর্শ লেগেছে বলে কেউ কেউ তাকে হিন্দুসংগীত থেকে বহিষ্কৃত করতে চান। যদি দ্বিজেন্দ্রলাল হিন্দুসংগীতে বিদেশী সোনার কাঠি ভুঁইয়ে থাকেন তবে সরস্বতী নিশ্চয়ই র্তাকে আশীৰ্বাদ করবেন। হিন্দুসংগীত বলে যদি কোনো পদার্থ থাকে। তবে সে আপনার জাত বঁচিয়ে চলুক ; কারণ তার প্রাণ নেই, তার জােতই আছে। হিন্দুসংগীতের কোনো ভয় নেইবিদেশের সংস্রবে। সে আপনাকে বড়ো করেই পাবে। চিত্তের সঙ্গে চিত্তের সংঘাত আজি লেগেছে- সেই সংঘাতে সত্য উজ্জ্বল হবে না, নষ্টই হবে, এমন আশঙ্কা যে ভীরু করে, যে মনে করে সত্যকে সে নিজের মাতামহীর জীর্ণ কথা আড়াল করে ঘিরে রাখলে তবেই সত্য টিকে থাকবে, আজকের দিনে সে যত আস্ফালনই করুক তাকে পথ ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে হবে । কারণ, সত্য হিন্দুর সত্য নয়, পলতেয় করে ফোটা ফোটা পুঁথির বিধান খাইয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় না! চার দিক থেকে মানুষের নাড়া খেলেই সে আপনার শক্তিকে প্রকাশ করতে পারে । r কৃপণতা দেশের কাজে যারা টাকা সংগ্ৰহ করিয়া ফিরিতেছেন, তাদের কেহ কেহ আক্ষেপ করিতেছিলেন যে, টাকা कुल ल ल ल ल कर सस्ता प्राप्त भारत लिख्नना, ঘটনা তাে এই কিন্তু কারণটা কী খুঁজিয়া বাহির করা চাই। রেলগাড়ির পয়ল দোসর শ্রেণীর কামরার